ইন্টারনেট কি ? ইন্টারনেট কিভাবে কাজ করে
ইন্টারনেট কি বা ইন্টারনেট কাকে বলে (What Is Internet In Bengali) এবং ইন্টারনেট কিভাবে কাজ করে এ বিষয়ে আজকের আর্টিকেলে আলোচনা করা হবে।
এছাড়া ইন্টারনেট আবিস্কারের ইতিহাস, ইন্টারনেটের ব্যবহার, ইন্টারনেটের প্রকারভেদ, বাংলাদেশে কত সালে ইন্টারনেট চালু হয় এবং ইন্টারনেটের সুবিধা ও অসুবিধার বিষয়ে এই আর্টিকেলে আপনারা জানতে পারবেন।

আধুনিক বিশ্ব ইন্টারনেটের বিশ্ব। ইন্টারনেট বিশ্বকে দিয়েছে যােগাযােগ ভাবনার নতুন পথ। ইন্টারনেটের মাধ্যমে পৃথিবীর যেকোনাে প্রান্ত থেকে খুব সহজেই তথ্য আদান প্রদানের কাজটি করা যায়।
ইন্টারনেট কম্পিউটার নেটওয়ার্কিং সিস্টেমের মাধ্যমে কাজ করে। নেটওয়ার্কিং সিস্টেম হলাে একের সাথে বহুর মিলন অর্থাৎ এক কম্পিউটার থেকে হাজারাে কম্পিউটারে একই সময়ে একই সজো তথ্য আদান প্রদানের প্রক্রিয়া।
ইন্টারনেট কি ? (What is Internet in Bengali)
ইন্টারনেট হলাে পৃথিবীব্যাপী ছড়িয়ে থাকা সমস্ত কম্পিউটারের মধ্যকার এক জাল। এর মূল কাজ এক নেটওয়ার্কের আওতায় থাকা কম্পিউটারগুলােকে অন্য সমস্ত নেটওয়ার্কভুক্ত কম্পিউটারের সাথে যুক্ত করা।
এভাবে সমস্ত নেটওয়ার্ক একত্র হয়ে যে সমন্বিত নেটওয়ার্ক সিস্টেম তৈরি হয়েছে তারই নাম ইন্টারনেট।
স্যাটেলাইট প্রযুক্তির সাথে কম্পিউটারকে কাজে লাগিয়ে তথ্য আদান – প্রদানের ক্ষেত্রে যে বিস্ময়কর অগ্রগতি সাধিত হয়েছে, তাকে বলে ইন্টারনেট।
ইন্টারনেট আধুনিক বিজ্ঞানের বিস্ময়কর অবদান। এটি আধুনিক প্রযুক্তির সর্বশেষ সংস্করণ।
ইন্টারনেটের বিস্ময়কর জাদুস্পর্শে আমরা আজ ঘরে বসেই সারা বিশ্বের ঘটনাপ্রবাহ শোনা, দেখা ও তথ্য আদান – প্রদান করতে পারছি।
ইন্টারনেট (Internet) শব্দটির পূর্ণরূপ ইন্টারকানেকটেড নেটওয়ার্ক (Interconnected Network)। ইন্টারনেট হচ্ছে এমন একটি ব্যবস্থা, যা বিশ্বব্যাপী বিস্তৃত।
এর মাধ্যমে অতি সহজে পৃথিবীর এক প্রান্তের কম্পিউটার থেকে অন্য প্রান্তের যেকোনো কম্পিউটারের সাহায্যে যাবতীয় তথ্য আদান – প্রদান করা যায়।
ইন্টারনেট কাকে বলে ? (Defination of Internet)
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ১৯৬৯ সালে তার সামরিক প্রয়ােজনে প্রথম ইন্টারনেট ব্যবহার করে। এই সিস্টেমটিকে কারিগরি সহায়তা দিয়েছিল ন্যাশনাল সায়েন্স ফাউন্ডেশন নামের একটি প্রতিষ্ঠান। প্রযুক্তিগত উৎকর্ষের কারণে তা ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।
১৯৮৪ সালে নেস্ফেনেট নাম নিয়ে সর্বসাধারণের জন্য ইন্টারনেট অবমুক্ত করা হয়। এতে শৃঙ্খলা আনার জন্য একটি স্থায়ী নেটওয়ার্ক গড়ে তােলেন প্রযুক্তিবিদরা। এই সিস্টেমটিই ইন্টারনেট নাম নিয়ে সমস্ত বিশ্বে প্রযুক্তির মশালকে বহন করে চলেছে।
বর্তমান বিশ্বসভ্যতার মূল চালিকাশক্তি ইন্টারনেট। আমাদের প্রাত্যহিক জীবনযাত্রার প্রতিটি ক্ষেত্রই এর দ্বারা প্রভাবিত।
সকালবেলা চায়ের সঙ্গে অনলাইন নিউজের আপডেটটি আমাদের প্রয়ােজন হয়ে দাঁড়ায়। তথ্যই সম্পদ আর তথ্য সংগ্রহে ইন্টারনেট অদ্বিতীয়।
সে কারণে ইন্টারনেট আজ দৈনন্দিন যাপিত জীবনের অগ্রাধিকারের তালিকায় ওপরের দিকে থাকে। সব বয়সের মানুষ আজ ইন্টারনেটের সঙ্গে তাদের জীবনের ছন্দ মিলিয়ে চলে।
সামাজিক যােগাযােগ এখন অনেকাংশে ইন্টারনেটনির্ভর। তাতে মানুষকে খানিকটা যান্ত্রিক মনে হলেও মানসিক বিনােদন সেখানে অগ্রগণ্য ভূমিকা পালন করে। পৃথিবী জুড়ে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা বর্তমানে ৩০ কোটি ছাড়িয়ে গেছে।
তাহলে ইন্টারনেট কি বা ইন্টারনেট কাকে বলে এ বিশেষ আশা করি আপনারা ভালোভাবে জানতে পেরেছেন।
ইন্টারনেটের ইতিহাস (History of Internet)
ইন্টারনেটের জন্ম ইতিহাস যাত্রা শুরু করে ১৯৬০ সাল থেকে।
সে সময় যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বাহিনী প্রথম ইন্টারনেট ব্যবহার করে। প্রতিরক্ষা বিভাগের কম্পিউটার বিজ্ঞানীরা চারটি কম্পিউটারের মধ্যে গড়ে তোলে প্রথম অভ্যন্তরীণ এক নতুন যোগাযোগব্যবস্থা।
এ যোগাযোগব্যবস্থার নাম ছিল ভাপার্নেট। মাত্র তিন বছরের ব্যবধানে ভাপার্নেট এর নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় আপার্নেট।
ক্রমশ চাহিদার ওপর নির্ভর করে ১৯৮৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল সায়েন্স ফাউন্ডেশন সর্বসাধারণের জন্য এরূপ অন্য একটি যোগাযোগব্যবস্থা চালু করে। এর নাম রাখা হয় নেস্ফোনেট।
মাত্র কয়েক বছরের ব্যবধানে নেস্ফোনেট এর বিস্তার সারা বিশ্বে ছড়িয়ে এ ব্যবস্থায় কিছুটা ঝামেলা দেখা দিলে তা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য গড়ে তোলা হয় কেন্দ্রীয় নেটওয়ার্ক।
নব্বইয়ের দোরগোড়ায় এ নেটওয়ার্ক বিশ্বব্যাপী পরিচিত লাভ করে ইন্টারনেট নামে।
ইন্টারনেটের প্রকারভেদ (Types of Internet)
সাধারণ ব্যবহারকারীগণ দুভাবে ইন্টারনেটের গ্রাহক হতে পারেন।
প্রথমত, কম্পিউটার বিশ্বে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন, এটি অনলাইন ইন্টারনেট নামে পরিচিত।
দ্বিতীয়ত, একটি সার্ভারকে মাধ্যম হিসেবে রেখে কম্পিউটার বিশ্বে বিচরণ। যা ই-মেইল বা অফলাইন ইন্টারনেট নামে পরিচিত।
উপরের আলোচনার মাধ্যমে ইন্টারনেট কি এবং ইন্টারনেট কত প্রকার এই বিষয়ে আশা করি জানতে পেরেছেন। এখন চলুন জেনে নেওয়া যাক, ইন্টারনেটের প্রয়োজনীয়তা এবং ইন্টারনেট কিভাবে কাজ করে?
ইন্টারনেটের প্রয়োজনীয়তা
ইন্টারনেট আধুনিক বিশ্বে এখন প্রতিটি ক্ষেত্রেই ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। ইন্টারনেট সার্ভিসের পরিধি এখন বেশ বিস্তৃত। এ থেকে ব্যবহারকারী প্রয়োজনীয় সফটওয়্যার (software) ব্যবহার করে তার চাহিদামতো সার্ভিসটি গ্রহণ করতে পারেন।
বর্তমানে ব্যাপকভাবে প্রচলিত এসব সার্ভিস হচ্ছে ই-মেইল, ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব, ওয়েব সার্চ ইঞ্জিন, গোফার, এফটিপি বা ফাইল ট্রান্সফার প্রটোকল (File Transfer Protocol), টেলনেট, কনফারেন্সিং, চ্যাটিং ইত্যাদি।
এসব সার্ভিসের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী প্রয়োজনীয় তথ্য, ছবি, শব্দ প্রভৃতি আদান – প্রদান করা হচ্ছে।
- তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির গুরুত্ব
- মোবাইল দিয়ে ছবি এডিট করার সেরা ১০ টি অ্যাপস
- ফ্রীতে মোবাইল দিয়ে ওয়েবসাইট তৈরি করার নিয়ম
ইন্টারনেটের অনলাইন ও অফলাইন
যদি কোনো দেশে ইন্টারনেটের সার্ভার (server) থাকে, তবে এ সার্ভারের সাহায্যে দুনিয়ার যেকোনো প্রান্তে রাখা অপর সার্ভারে যোগাযোগ করা যায়।
এক ব্যবহারকারীর সাথে অপর ব্যবহারকারীর (user) এ সংযোগকে বলা হয় অনলাইন (online)।
কিন্তু যেসব দেশে সার্ভার (server) নেই, সে ক্ষেত্রে অপর দেশের সার্ভারের সাথে প্রথমে টেলিফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ করতে হয়। একে বলে অফলাইন (offline)।
অফলাইনে খরচ বেশি এবং সময়ও লাগে বেশি। আনুষ্ঠানিকভাবে অনলাইন ইন্টারনেট এর উদ্বোধন করে বাংলাদেশ টিঅ্যান্ডটি বোর্ড প্রথমবারের মতো ব্যক্তিগত পর্যায়ে স্যাটেলাইট যোগাযোগের ব্যবস্থা করে দেয়। ব্যবস্থাটির নাম VSAT (Vast Very Small Aperture Termenal)।
উল্লেখ্য, VAST এর মাধ্যমে এখন টিঅ্যান্ডটি বোর্ডের সাহায্য ছাড়াই সরাসরি রেডিও তরঙ্গের মাধ্যমে ইন্টারনেটের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করা যায়।
দৈনন্দিন জীবনে ইন্টারনেটের প্রভাব
ইন্টারনেট হচ্ছে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের কম্পিউটারগুলোর নেটওয়ার্কের নেটওয়ার্ক। অর্থাৎ ইন্টারনেট হচ্ছে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে অবস্থিত কম্পিউটারগুলোর নেটওয়ার্ক।
বাণিজ্যিক কিংবা পেশাগত কাজে ইন্টারনেট ব্যবহার যেমন কাজকর্মের গতিকে বাড়িয়ে দিয়েছে, তেমনি দৈনন্দিন বিভিন্ন প্রকার কাজে ইন্টারনেট মানবজীবনে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছে।
সকালে ঘুম থেকে উঠে খাবার খাওয়া, পড়াশোনা করা, কোথাও বেড়াতে যাওয়া, আবহাওয়ার পূর্বাভাস শোনা, জন্মদিনের শুভেচ্ছা পাঠানো , এমনকি তথ্য আদান – প্রদানের ক্ষেত্রে মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করছে।
ইন্টারনেট মানুষের দৈনন্দিন জীবনে যে পরিবর্তন এনেছে, তার কিছু ক্ষেত্র নিচে উল্লেখ করা হলো:
- বর্তমানে ইন্টারনেটে খাবারের অর্ডার দেওয়া যায়।
- ঘরে বসেই ইন্টারনেটের সাহায্যে কেনাকাটা করা যায়।
- GPRS সিস্টেম ব্যবহার করে অচেনা জায়গায় সহজেই পৌছানো সম্ভব হয়।
- ব্যবসা – বাণিজ্যের খোঁজখবর নেওয়া, লেনদেন করা, ঘরে বসেই অফিস পরিচালনা করা যায়।
- ই-মেইলের মাধ্যমে শুভেচ্ছা কার্ড পাঠানো যায়।
- প্রয়োজনীয় তথ্য আদান – প্রদান করা যায়।
- দূরবর্তী স্থান থেকে ভিডিও কনফারেসিংয়ের মাধ্যমে সরাসরি মতবিনিময় সভায় অংশগ্রহণ করা যায়।
- টেলিকনফারেনসিংয়ের মাধ্যমে চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করা যায়।
- ইন্টারনেট ব্যবহার করে বিমান ও রেলের টিকিট সংগ্রহ করা যায়।
- বইপড়া ছাড়াও গবেষণামূলক কাজ পরিচালনা করা যায়।
ইন্টারনেট সংযোগ (Internet Connection)
আইএসএস হংকং ভিত্তিক সুপারনেটের সাহায্যে বাংলাদেশের গ্রাহকদের ইন্টারনেট সার্ভিস (internet service) সুবিধা দিচ্ছে।
সাবমেরিন ক্যাবলের মাধ্যমেও ব্রডব্যান্ডের (broadband) আওতায় বাংলাদেশের গ্রাহকরা ইন্টারনেট সুবিধা পাচ্ছে।
এ ছাড়া বর্তমানে বাংলাদেশের মোবাইল অপারেটরগুলোও ওয়্যারলেস ইন্টারনেট সংযোগ (Warless Internet Connection) দিচ্ছে। এর দ্বারা গ্রাহকরা কম্পিউটারের মাধ্যমে এবং মোবাইল ফোনসেটের মাধ্যমেও তথ্য আদান – প্রদান করতে পারছে।
ইন্টারনেট কি, ইন্টারনেট কি কি কাজে ব্যবহার করা হয় এবং ইন্টারনেট সংযোগ কি এই বিষয়ে উপরে আপনারা ভালোভাবে জেনে গেছেন। এখন চলুন জেনে নেওয়া যাক কিভাবে কাজ করে ইন্টারনেট?
অবশ্যই পড়ুন:
- ফ্রিল্যান্সিং কি ? ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার শুরু করার গাইডলাইন
- কিভাবে ইউটিউব থেকে টাকা আয় করা যায় ?
- ছাত্রদের জন্য অনলাইনে আয় করার সেরা ৮ টি উপায়
- অনলাইন থেকে মাসে ২০ হাজার টাকা আয় করার উপায়
ইন্টারনেট কিভাবে কাজ করে ?
ইন্টারনেটের কার্যকারিতার কেন্দ্রবিন্দু হচ্ছে ইন্টারনেট ব্যাকবোন।
ইন্টারনেট ব্যাকবোন হচ্ছে একধরনের যোগাযোগ নেটওয়ার্ক, যা তথ্যপ্রযুক্তির সাথে সম্পর্কিত বিভিন্ন ধরনের অবকাঠামোগত উপাদানকে সমনিত করে সুযোগ করে দেয়।
ইন্টারকানেকট পয়েন্টগুলোকে সংযুক্তকারী দ্রুতগতির ডাটা লাইনকে বলা হয় ইন্টারনেট ব্যাকবোন।
ব্যাকবোনের প্রতিটি প্রান্তে দ্রুতগতির রাউটার (router) বসানো থাকে।
রাউটার হচ্ছে যোগাযোগ নেটওয়ার্কের একটি অংশ, যা কোনো একটি পয়েন্ট থেকে ডাটা (Data) গ্রহণ করে এবং সবচেয়ে কম দূরত্বের পথে কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে তা পাঠিয়ে দেয়।
আর এভাবেই ইন্টারনেটের কার্যক্রম পরিচালিত হয়।
ইন্টারনেটের ব্যবহার – (Uses of Internet)
১৯৯৩ সালের ১১ নভেম্বর অফলাইন প্রযুক্তির মাধ্যমে বাংলাদেশে ইন্টারনেটের ব্যবহার শুর হয়। তখন বিষয়টি শুধু ই মেইলের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। বিটিআরসির (BTRC) ল্যান্ডলাইনের মাধ্যমে ডায়ালআপ কানেকশন থেকে তখন ইন্টারনেট ব্যবহার করা হতাে।
১৯৯৬ সালের ৪ জুন বাংলাদেশে ভিএসএটি চালুর মাধ্যমে প্রথম অনলাইন ইন্টারনেট চালু করে আইএসএন।
এরপর সাইবার নেট, ইউ অনলাইন, ব্রাক বিজিমেইল, প্রস্টোনেট, অগ্নি সিস্টেমসহ বর্তমানে আরও অনেক প্রতিষ্ঠান ইন্টারনেট সার্ভিস প্রােভাইডার (Internet Service Provider) হিসেবে কাজ করছে।
পাথরে পাথরে ঘষা লাগিয়ে মানুষ যেদিন প্রথম আগুন আবিষ্কার করেছিল, সেদিন থেকেই সভ্যতার প্রাচুর্যের সূত্রপাত হয়েছিল।
একইভাবে তথ্যের পৃথিবীতে ইন্টারনেট মানুষকে তথ্যপ্রাচুর্যে পরিপূর্ণ করেছে। বাংলাদেশে এই উৎকর্ষ সাধিত হয়েছে মােবাইলের মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযােগ প্রাপ্তিতে।
যেকোনাে সময় যেকোনাে স্থানে স্মার্টফোনের মাধ্যমে মানুষ এখন ইন্টারনেটে সংযুক্ত হয়। এই প্রযুক্তি দিনকে দিন এত বেশি জনপ্রিয় হচ্ছে, মােবাইল ফোনে কথা বলা আর ইন্টারনেটের ব্যবহার এখন প্রায় সমান সমান হয়ে এসেছে।
জিপিআরএস, জিপিএস প্রযুক্তি পেরিয়ে এখন মােবাইল ইন্টারনেট ফোরজি অর্থাৎ চতুর্থ প্রজন্ম প্রযুক্তিতে পৌঁছেছে। ইতােমধ্যে মােবাইল হ্যান্ডসেটগুলােতেও যুগান্তকারী পরিবর্তন এসেছে।
মােবাইল ফোনে কথা বলা ছাড়াও ইন্টারনেটের যাবতীয় কর্মকাণ্ড করা সম্ভব হচ্ছে। গ্রাহকের চাহিদাকে বিবেচনায় রেখে বিশ্ববিখ্যাত সার্চ ইঞ্জিন প্রতিষ্ঠান গুগল এনড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেম প্রবর্তন করেছে।
মােবাইল ফোনের মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর অধিকাংশই এখন এই অপারেটিং সিস্টেমের (Operating System) সঙ্গে পরিচিত। এছাড়াও আইফোন (iPhone), উইন্ডোজ (Windows) ইত্যাদিরও রয়েছে নিজস্ব অপারেটিং সিস্টেম।
অবশ্যই পড়ুন:
- ওয়েবসাইট কি ? ওয়েবসাইট এর প্রকারভেদ এবং কাজ
- ওয়েব পেজ কাকে বলে ? ওয়েব পেজ তৈরি করার নিয়ম
- ইউটিউব চ্যানেল খোলার নিয়ম
বাংলাদেশে কত সালে ইন্টারনেট চালু হয় ?
১৯৯৩ সালের ১১ ই নভেম্বর ইন্টারনেট ব্যবহার শুরু হয়।
সে সময় অফলাইনের মাধ্যমে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান মেইল সার্ভিস দিয়ে আসছিল। এর মধ্যে প্রদেষ্টার দৃক, ট্যাপ, আগ্র সিস্টেম, বিডিমেল, বিডিনেট এবং আরোরা-১ উল্লেখযোগ্য।
অফলাইনে সংযুক্ত থাকায় এসব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তথ্যের বিশাল জগতের সব সম্পদ ব্যবহার করা সম্ভব হয়নি।
ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা
বাংলাদেশে ৯৫.৪৫ মিলিয়ন মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করে। (সূত্র: বিবিএন)
অবশ্য সরাসরি গ্রাহকসংখ্যা বিবেচনা করে এ সংখ্যা অনুমান করা হয়েছে।
সারা দেশে অসংখ্য সাইবার ক্যাফের ব্যাপক প্রসার ঘটায় এ সংখ্যা অনেক বেড়ে গিয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ইন্টারনেট সেবার ধরন ও সহজলভ্যতা
একসময় বাংলাদেশে ইন্টারনেট সেবা টেলিফোনের ওপর নির্ভর করলেও বর্তমানে বেশ কিছু রেডিও লিংক ও ব্রডব্যান্ডের মাধ্যমে ইন্টারনেট সেবা প্রদান করছে।
সম্প্রতি মোবাইল কোম্পানিগুলো মোবাইল সংযোগের মাধ্যমে ইন্টারনেট সেবা চালু করায় ইন্টারনেট কম্পিউটারের পাশাপাশি মোবাইল ফোনে বহুল ব্যবহার শুরু হয়েছে।
ওয়ারলেস সংযোগ হওয়ায় এর চাহিদা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। পাশাপাশি সেটকস্ট না থাকায় গ্রাহকের কাছে এটি অত্যন্ত সহজলভ্য হয়ে উঠছে।
কারণ, মোবাইল ইন্টারনেট দিয়ে কম্পিউটারেও ইন্টারনেট ব্যবহার করা যায়।
ইন্টারনেটের সুবিধা (Advantages of Internet)
ইন্টারনেটের ব্যবহারও যেমন বহুমুখী, তেমনি এর গুরুত্বও বহুমুখী।
এখন ইন্টারনেটকে কেন্দ্র করেই মানুষ তার নানাবিধ ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সাজায়। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ব্যবসা, সামাজিকতাসহ প্রায় সবখানেই ইন্টারনেট অপরিহার্য।
ই এডুকেশন (E Education), ই কমার্স (E Commerce) ইন্টারনেটকে ভিত্তি করেই গড়ে উঠেছে। তথ্য সংগ্রহে পৃথিবীর তাবৎ কর্মযােগীরা ইন্টারনেটকে আশ্রয় করেছে। ঘরে বসে শিক্ষা বা কেনাকাটা এখন নিত্যদিনের ব্যাপার।
দুরারােগ্য রােগ নিরাময়ে বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা এখন ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে চমৎকার সব সমাধান দেন। তাতে মানুষের অর্থ ও সময় দুই ই সাশ্রয় হয়। বিদেশে উচ্চশিক্ষায় আগ্রহী ছেলেমেয়েরা আজ ইন্টারনেটের মাধ্যমেই বিশ্বের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের স্কলারশিপগুলাে আয়ত্ত করে।
ইন্টারনেট এর ফলে পরবর্তী প্রজন্মের মানুষ হবে আরও চৌকস ও বুদ্ধিমান। তাদের কাছে ইন্টারনেট হয়তাে আরও অনেক নতুন দিক খুলে দেবে।
ইতােমধ্যে অপটিক্যাল ফাইবার (Optical Fibre) লেন সংযুক্ত হয়েছে। এর আওতায় পুরাে দেশ এলে ইন্টারনেটের গতি বাড়বে, খরচ কমবে।
মানুষ তখন আরও প্রযুক্তিমুখী হবে। তবে প্রযুক্তিকে মানুষের সর্বময় কল্যাণে ব্যবহার করা একটা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে।
ইন্টারনেটের অসুবিধা (Disadvantages of Internet)
ইন্টারনেটের অসংখ্য ভালাে দিকের পাশাপাশি এর কিছু নেতিবাচক দিকও রয়েছে। ইন্টারনেটের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার করে অনেকেই সময় নষ্ট করে।
এছাড়াও কুরুচিপূর্ণ গান, ভিডিও ইত্যাদির কারণে বিপথগামী হচ্ছে তরুণদের একাংশ। অসাধু ব্যক্তিরা ইন্টারনেট ব্যবহার করছে তাদের ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপের জন্য।
ইন্টারনেটের অপকারিতা
আলোর বিপরীতে অন্ধকার। চাঁদের কলঙ্ক ও গোলাপের কাঁটার মতো ইন্টারনেট নামক আধুনিক বিশ্বের সর্বাধুনিক প্রযুক্তিটিরও রয়েছে নানা অপকার।
কারণ, এ বিশাল তথ্যভাণ্ডারের মাঝে রয়েছে কিছু অশ্লীলতা এবং নগ্নতা, যা আমাদের তরুণসমাজকে বিপথগামী করছে। ঠেলে দিচ্ছে অন্ধকার পৃথিবীর দিকে।
পরিশেষে
বিজ্ঞানের এ যুগে মানুষ প্রযুক্তিমুখী হয়ে তার কর্মদক্ষতাকে প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি করছে। এ ক্ষেত্রে ইন্টারনেট অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। তবে প্রযুক্তির এ দৌড়ে মানুষকে মানবিক হয়ে প্রযুক্তির ব্যবহার সারতে হবে। তবেই ইন্টারনেট নামক প্রযুক্তির বিপ্লব পরিপূর্ণতা পাবে।
ইন্টারনেট আধুনিক প্রযুক্তির বিস্ময়কর উদ্ভাবন। ইন্টারনেট বহুবিধ সুবিধা প্রদান করে বদলে দিয়েছে আমাদের জীবনযাত্রাকে। ছোট করে ফেলেছে বিশাল বিশ্বকে।
সারা বিশ্বের মানুষ আনন্দ ভরে সুস্বাগতম জানিয়েছে। নিজের প্রয়োজনে একে ব্যবহার করছে নানা দিকে ও নানা কায়দায়। বাংলাদেশের বৃহত্তম জনগোষ্ঠীকে ইন্টারনেট সুবিধা দেওয়ার জন্য দেশব্যাপী সরকারি উদ্যোগে ব্যবস্থা গড়ে তোলা প্রয়োজন।
পাশাপাশি বেসরকারি উদ্যোক্তাদেরকেও সুযোগ সুবিধা প্রদান করতে হবে। এ বিস্ময়কর যোগাযোগব্যবস্থা ও তথ্যের ভাণ্ডারকে বাংলাদেশের সর্বস্তরের জনগণের কাছে পৌঁছে দিয়ে জাতিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়াই এখন আমাদের মূল কর্তব্য।
অবশ্যই পড়ুন:
- টেলিগ্রাম কি ? এই অ্যাপের সুবিধা, ইতিহাস এবং বৈশিষ্ট্য
- অনলাইন কোর্স কি ?
- অ্যানিমেশন কি ?
- ইংরেজি শেখার সহজ উপায়
What is Internet ?
Internet is a modern international computer network. It is the most convenient and reliable and cheapest mode of communication.
It is the computer based global information system. It is a speedy transmitting system of information with the help of computer and network. Its functions are smooth, easy and rapid.
It plays an effective role in the field of trade and commerce. We can transfer file from one computer to another by using protocol. We can chat with others by using internet relay chat.
By using e-mail we can exchange information to one another. Educational institutions, offices, banks, trade and commerce are greatly benefited through the use of internet. It plays an effective role in the fields of trade and commerce.
Students can go through several books from the libraries without going there. It has also demerits. Deception, watching pornography, gambling, blackmailing are being increased through internet.
Especially the young generation is greatly affected by internet. They watch obscene and violent movies, pornography. As a result, they are being engaged in bad thing, become desperate.
তাহলে ইন্টারনেট কি অথবা ইন্টারনেট কাকে বলে (What is Internet in Bangla), ইন্টারনেট কিভাবে কাজ করে, ইন্টারনেটের ব্যবহার, ইন্টারনেটের সুবিধা এবং অসুবিধা এসব বিষয়ে আশা করি আজকের আর্টিকেলে আপনারা ভালোভাবে জানতে পেরেছেন।
যদি আর্টিকেলটি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই শেয়ার করবেন। আর ইন্টারনেটের বিষয়ে কোন কিছু জানার থাকলে অবশ্যই নিচে কমেন্ট করে জানাবেন।
Great article.
Thank you.