নতুন ইমেইল আইডি খোলার নিয়ম – (ইমেইল একাউন্ট তৈরি)
বন্ধুরা, একটি নতুন ইমেইল আইডি খোলার নিয়ম কি অথবা সহজে মোবাইল দিয়ে নতুন ইমেইল আইডি কিভাবে খুলবো এবং ইমেইল একাউন্ট তৈরী করতে কি কি লাগবে এই সব বিষয়ে সম্পূর্ণ টিউটোরিয়াল আজকের আর্টিকেলে আপনারা পেয়ে যাবেন।
আপনি যদি নতুন জিমেইল আইডি কিভাবে খুলবো বা জিমেইল একাউন্ট খোলার নিয়ম জানতে চাচ্ছেন, তাহলে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি ভালোভাবে পড়তে থাকুন। (How to Creat a New Email Account in Bengali)
ইমেইল কি ? Email এর ব্যবহার এবং সুবিধা এ বিষয়ে আমাদের আগের আর্টিকেলটি পড়ার মাধ্যমে Email সম্পর্কে আপনি সবকিছু ভালোভাবে জেনে নিতে পারবেন।
এখনও অনেকেই আছেন, যারা “ইমেইল” আর “জিমেইল” কে একই মনে করেন। কিন্তু Email আর Gmail এগুলো প্রত্যেকটি যে আলাদা আলাদা প্লাটফর্ম (platform), এটা অনেক মানুষই সঠিকভাবে জানেন না।
তাই আজকের আর্টিকেলটি ভালোভাবে পড়লে আপনারা ইমেইল ও জিমেইল এর বিষয়ে পরিষ্কার ধারণা পেয়ে যাবেন এবং সেই সাথে নিচে Email account খোলার নিয়ম সম্পর্কে স্টেপ বাই স্টেপ আলোচনা করা হবে।
তাই মোবাইল অথবা কম্পিউটার দিয়ে নতুন ইমেইল আইডি কিভাবে খুলতে হয় এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনযোগ সহকারে পড়ুন।
ইমেইল আইডি কি ? (What is Email Account in Bangla)
বন্ধুরা, একটি একটি ইমেইল একাউন্ট তৈরি করার আগে আমাদের ইমেইল আইডি কাকে বলে এই বিষয়ে ভালোভাবে জেনে নেওয়া প্রয়োজন।
যদি আপনি এই বিষয়টি ভালোভাবে জানতে পারেন তাহলে ইমেইল আইডি খোলার পরবর্তী ধাপগুলো খুব সহজেই বুঝতে পারবেন।
ইমেইল (Email) কথাটির মানে হলো ইলেকট্রনিক মেইল (Electronic Mail) বা ইলেকট্রনিক চিঠি।
ইমেইল এর মাধ্যমে যে কোন লেখা (text), ছবি (photo) বা ডকুমেন্টস (document) অন্য যে কোন ইমেইল ঠিকানায় ইলেকট্রনিকভাবে পাঠাতে (send) পারি।
যাদের ইমেইল ঠিকানা (Email Address) থাকে, তাদের প্রত্যেকেরই একটি করে মেইল বক্স (Mail Box) থাকে।
কোন sender তার ইমেইল এড্রেস থেকে মেইল পাঠালে সেটা receiver এর মেইল বক্সে এসে জমা হয়। এরপর রিসিভার তার মেইল বক্স থেকে ইমেইলটি যখন ইচ্ছা খুলে পড়তে পারে।
একটি ইমেইল এড্রেস এর দুইটি অংশ থাকে। একটি username এবং অন্যটি হলো domain name।
যেমন: আমাদের email address হলো [email protected]
এখানে, আমাদের ইমেইল ঠিকানাটিতে @ এর আগের অংশটুকু অর্থাৎ itjanodotxyz হলো আমাদের ইউজারনেম।
আর, @ এর পরের অংশটুকু অর্থাৎ gmail.com হলো ইমেইল সেবা দানকারী প্রতিষ্ঠান “Gmail” এর ডোমেইন নেম।
তাহলে ইমেইল আইডি বা ইমেইল এড্রেস কি এই বিষয়ে আশা করি আপনারা ভালো করে জানতে পেরেছেন।
ইমেইল আইডি কত ধরনের ? (Types of Email Account)
ইমেইল আইডি কত প্রকার? এই প্রশ্নটি যদি আপনি করে থাকেন, তাহলে এই সহজ উত্তর হলো ইমেইল আইডি দুই ধরনের হয়ে থাকে।
যেমন:
- পেইড ইমেইল একাউন্ট (Paid Email Account)
- ফ্রি ইমেইল একাউন্ট (Free Email Account)
বর্তমানে সারা বিশ্বে যতগুলো ইমেইল ব্যবহারকারী (email user) রয়েছেন, তারা সকলেই এই দুই ধরনের ইমেইল একাউন্ট ব্যবহার করে থাকেন।
Paid Email Address:
যখন আপনি কোন ইমেইল সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে টাকার বিনিময়ে ইমেইল সেবা (service) গ্রহণ করবেন তখন সেটাকে বলা হয় পেইড ইমেইল এড্রেস।
পেইড ইমেইল আইডি ব্যবহার করার ক্ষেত্রে আপনাকে অর্থ ব্যয় করতে হবে। এই ধরনের ইমেইল সাধারণত professional কাজগুলোর ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়।
যেমন: কোন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান কিংবা কোম্পানি (company) অথবা এডুকেশনাল ইন্সটিটিউশন (educational institution) গুলো তাদের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট (website) এর নামে ইমেইল এড্রেস ব্যবহার করে থাকেন।
এই সব ইমেইল এড্রেসকে ডোমেইন ইমেইল (domain email) ও বলা হয়ে থাকে।
Free Email Address:
যে সব ইমেইল সেবা ব্যবহারের ক্ষেত্রে আপনাকে কোন ধরনের অর্থ ব্যয় করতে হবে না, এগুলো হলো ফ্রি ইমেইল সার্ভিস (service)।
অর্থাৎ অনেকগুলো ইমেইল সার্ভিস প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যেগুলো ইউজারদের একেবারে বিনামূল্যে ইমেইল সেবা প্রদান করে থাকে এবং ব্যবহারকারীরা কোন প্রকার অর্থ খরচ না করে নিজের ইমেইল একাউন্ট তৈরি করতে পারেন।
তারা বিভিন্ন কাজে সেই ইমেইল একাউন্ট ব্যবহার করতে পারেন। এই ধরনের ইমেইল সার্ভিসকে বলা হয় ফ্রি ইমেইল।
কেন ইমেইল আইডি খুলবেন ? ইমেইল একাউন্ট এর সুবিধাসমূহ
- ইমেইল হলো মেসেজ আদান প্রদান করার এক প্রকার ফ্রি টুল (tool), যেটা ব্যবহার করে যে কেউ অন্য যেকোন ইমেইল ব্যবহারকারীকে মেসেজ পাঠাতে পারে।
- যদি আপনি একটি ইমেইল একাউন্ট তৈরি করে নেন, তাহলে আপনি খুব সহজেই যেকোন message লিখে পাঠাতে পারবেন এবং অন্য ইউজারদের কাছ থেকে message গ্রহণ (receive) করতে পারবেন।
- আপনার ডিভাইসে internet connection থাকলে পৃথিবীর যেকোন প্রান্ত থেকে আপনি ইমেইল ব্যবহার করে তথ্য আদান প্রদান করতে পারবেন।
- ইমেইল এর মাধ্যমে খুব সহজেই ছবি, ডকুমেন্টস কিংবা ফাইলস শেয়ার করা যায়।
- প্রফেশনাল কাজের ক্ষেত্রে তথ্য আদান-প্রদান করার কাজে ইমেইল এর ব্যবহার সর্বাধিক।
- বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া ওয়েবসাইট, যেমন: Facebook, Twitter, Instagram ইত্যাদিতে নতুন একাউন্ট বা আইডি খোলার সময় ইমেইল এড্রেস এর দরকার হয়।
আমরা “গুগল জিমেইল” ব্যাতিত সাধারণ যে ইমেইল একাউন্টগুলো ব্যবহার করে থাকি, সেসব ইমেইল একাউন্টের দ্বারা আমরা উপরোক্ত সুবিধাসমূহ পেতে পারি।
তবে, আপনি যদি গুগলের ফ্রি ইমেইল সার্ভিস প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান “জিমেইল” এর মাধ্যমে আপনার ইমেইল একাউন্ট খুলে থাকেন, তাহলে এসব সুবিধার বাইরেও আরও বেশ কিছু সুবিধা আপনি উপভোগ করতে পারবেন।
যেমন:
- যখন আপনি Gmail এর মাধ্যমে আপনার ইমেইল আইডি খুলবেন, তখন আপনার একটি গুগল একাউন্ট খোলা হয়ে যাবে। এর মানে হলো, আপনার তৈরি করা জিমেইল একাউন্ট টাকেই বলা হবে গুগল একাউন্ট (Google Account)। আর এই গুগল একাউন্ট এর দ্বারা আপনি গুগলের প্রদানকৃত সকল service ব্যবহার করতে পারবেন।
- প্রত্যেক এন্ড্রয়েড মোবাইল বা স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের জন্য গুগল একাউন্ট বা জিমেইল একাউন্ট থাকা আবশ্যক।
- জিমেইল এ ইমেইল একাউন্ট তৈরি করলে আপনার প্রত্যেকটি একাউন্টের সাথে গুগল ড্রাইভ এর ১৫ জিবি storage ফ্রিতে দেওয়া হয়। যেখানে আপনি আপনার প্রয়োজনীয় বিভিন্ন ফাইলস, ডকুমেন্টস, ভিডিও অথবা পিকচার আপলোড করে সেটা নিরাপদে সংরক্ষণ করে রাখতে পারবেন।
- এই গুগল একাউন্টের মাধ্যমে আপনি ইউটিউব চ্যানেল খুলতে পারবেন এবং ইউটিউবে বিভিন্ন চ্যানেলকে subscribe, like, comment এবং share করতে পারবেন।
মোটকথা হলো, জিমেইল এ ইমেইল একাউন্ট তৈরি করলে আপনি গুগল এর সকল প্রকার সার্ভিস অনেক সহজেই ব্যবহার করতে পারবেন।
ইমেইল আইডি খুলতে কি কি লাগে ?
বন্ধুরা, কেন একটি ইমেইল আইডি খোলার আপনার দরকার এই বিষয়ে উপরে আশা করি ভালোভাবে জানতে পেরেছেন।
এখন আপনি যদি ভেবে থাকেন যে, আমি নতুন ইমেইল আইডি খুলবো, এজন্য আমার কি কি লাগবে?
তাহলে জেনে রাখুন, মাত্র কয়েকটি জিনিসের মাধ্যমেই আপনি নতুন ইমেইল আইডি বা জিমেইল একাউন্ট খুলে নিতে পারবেন।
একটি ইমেইল আইডি খোলার জন্য আপনার মোটামুটি তিনটি জিনিসের প্রয়োজন হবে। চলুন নিচে এগুলো সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
- একটি মোবাইল ফোন বা কম্পিউটার: আপনি যদি নিউ জিমেইল একাউন্ট খুলতে চান এবং ইমেইল ব্যবহার করতে চান তাহলে আপনার অবশ্যই একটি কম্পিউটার বা এন্ড্রয়েড মোবাইল ফোন থাকতে হবে।
- একটি মোবাইল নম্বর: আমরা যখন কোন সোশ্যাল মিডিয়া ওয়েবসাইটে একাউন্ট খুলে থাকি, তখন সেখানে আমাদের মোবাইল নম্বর দিতে হয়। আর এই mobile number এর মাধ্যমে আমরা তৈরি করা একাউন্ট ভেরিফাই (verify) করে থাকি। একইভাবে, ইমেইল কিংবা জিমেইল আইডি খোলার ক্ষেত্রেও আপনাকে একটি মোবাইল নম্বর provide করতে হবে।
- ইন্টারনেট কানেকশন: আপনি মোবাইল ফোন অথবা কম্পিউটার যেটা দিয়েই ইমেইল আইডি তৈরি করেন, আপনার ডিভাইসে ভালো ইন্টারনেট কানেকশন অব্যশ্যই থাকতে হবে। এছাড়া আপনি কোনভাবেই ইমেইল আইডি খুলতে পারবেন না।
উপরে উল্লিখিত জিনিসগুলো আপনার থাকলে খুব সহজেই একটি ইমেইল আইডি বা জিমেইল আইডি খুলতে পারবেন।
একটি নতুন ইমেইল আইডি খোলার নিয়ম জানার আগে সেরা ইমেইল পরিষেবা প্রদানকারী কোম্পানি বাছাই করে নিতে হবে।
সেরা ইমেইল পরিষেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান নির্বাচন করুন – (Email Service Provider)
ইন্টারনেটে অনেকগুলো ইমেইল পরিষেবা দানকারী প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যেগুলো প্রত্যেক internet user -কে নিজের email account creat করার সুবিধা দিয়ে থাকে।
কিন্তু যদি কথা আসে, সম্পূর্ণ বিনামূল্যে সেরা ইমেইল পরিষেবা প্রদানকারী কোম্পানি কি কি?
তাহলে আমরা তিনটি সেরা ইমেইল সার্ভিস প্রোভাইডার এর কথা বলতে পারি।
যেমন:
- Gmail
- Yahoo Mail
- Outlook
আপনার নিজের একটি নতুন ইমেইল একাউন্ট তৈরী করার ক্ষেত্রে আপনি উপরের উল্লেখ করা free email service provider গুলো ব্যবহার করতে পারবেন।
তবে, কোন ইমেইল সেবাদাতা ব্যবহার করে আপনার একটি নতুন ইমেইল আইডি তৈরী করা উচিত সেটা সিলেক্ট করার জন্য আপনাকে আগে এই তিনটি প্লাটফর্মের features এবং functions গুলোর ব্যাপারে ধারণা নিতে হবে।
উপরে বলা তিনটি email platform -ই ভালো, আর আপনি এদের মধ্যে যেকোন একটি ব্যবহার করে আপনার ইমেইল এড্রেস বানিয়ে নিতে পারেন।
তবে এদের মধ্যে সেরা ইমেইল সেবা প্রদানকারী নির্বাচন করতে আপনাকে একটু রিসার্স করতে হবে।
1. Gmail – (Google Mail)
Google Mail এর সংক্ষিপ্ত রূপ হলো Gmail। এটি একটি সসম্পূর্ণ ফ্রি ইমেইল সার্ভিস, যার সাহায্যে আপনি পৃথিবীর যেকোন স্থানে থাকা যেকোন মানুষকে ইন্টারনেটের মাধ্যমে খুব কম সময়ে ইমেইল পাঠাতে পারবেন।
এর সাহায্যে আপনি চিঠি, ডকুমেন্ট, ফাইল, ছবি ইত্যাদি সহজে শেয়ার করতে পারবেন।
Google Play Store এ Gmail এর এন্ড্রয়েড app টি ১ বিলিয়ন বার install করা হয়েছে, যা গুগল প্লে স্টোরে থাকা অন্যান্য app গুলোর থেকে বেশি।
জিমেইল এ ইমেইল একাউন্ট তৈরী করলে 15GB স্টোরেজ গুগল ফ্রিতেই প্রত্যেক ব্যবহারকারীকে দিয়ে থাকে, যেটা গুরুত্বপূর্ণ ফাইল সংরক্ষণ করতে অনেক কাজে আসে।
মোটকথা, এন্ড্রয়েড হলো গুগলের সার্ভিস, আর আপনি যদি একজন এন্ড্রয়েড মোবাইল ইউজার হয়ে থাকেন, তাহলে আপনাকে গুগলের সকল সার্ভিসগুলো যেমন: গুগল প্লে স্টোর, গুগল সার্চ, গুগল ক্রোম ব্রাউজার, ইউটিউব, গুগল ড্রাইভ, গুগল এসিস্ট্যান্ট, গুগল ম্যাপস ইত্যাদি অবশ্যই ব্যবহার করতে হবে।
আর একটি জিমেইল একাউন্ট থাকলে আপনি এই সকল সার্ভিস খুব সহজেই ব্যবহার করতে পারবেন।
জিমেইলে আপনি Two factor authentication এর মতো advanced security feature পেতে পারবেন।
2. Yahoo Mail
ইয়াহু মেইল হলো আরেকটি জনপ্রিয় বিনামূল্যে ইমেইল পরিসেবা। এই সেবাটি Computing company ইয়াহু ইনকর্পোরেটেড নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।
Comscore এর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ইয়াহু হলো পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম ওয়েবভিত্তিক ইমেইল পরিসেবা প্রদানকারী, যা ১৯৯৭ সালে শুরু হয়।
এখানে রয়েছে শক্তিশালী spam protection, virus protection এবং storage capacity।
ইয়াহু এর অন্যান্য পরিসেবাগুলোর মধ্যে রয়েছে Yahoo Contacts, Yahoo Calender ইত্যাদি।
তবে, ইয়াহু মেইল এর অসুবিধাগুলো হলো, ফ্রি একাউন্টে POP সাপোর্টের অভাব, ভারী ওয়েব ইন্টারফেস এবং বিজ্ঞাপনের উপস্থিতি।
3. Outlook
আউটলুক হলো Microsoft এর একটি ফ্রি ইমেইল পরিষেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান।
বেশি বেশিরভাগ সময় businesses এবং professionals দ্বারা ব্যবহার করা হয়।
Gmail এবং Yahoo Mail এর মতো এখানেও two factor authentication and encryption নামে advanced security feature আপনারা পেয়ে যাবেন।
Outlook এ একটি ইনবক্সের মধ্যে একাধিক ইমেইল দেখা, ক্যালেন্ডার, টাস্ক লিস্ট ইত্যাদি বিভিন্ন ফিচারসগুলো আপনারা ব্যবহার করতে পারবেন।
আপনি যদি একটি Outlook ব্যবহার করে নিজের ইমেইল একাউন্ট তৈরি করেন, তাহলে মাইক্রোসফট কোম্পানির অন্যান্য পরিষেবা গুলোও আপনি ব্যবহার করতে পারবেন।
যেমন: Office 365 এবং OneDrive।
এগুলো ছাড়াও Zoho mail, iCloud mail এর মতো অন্যান্য ইমেইল সেবাদাতা গুলোর মাধ্যমেও আপনারা ইমেইল আইডি তৈরি করতে পারবেন।
ইমেইল ও জিমেইল এর মধ্যে কোন পার্থক্য আছে কিনা? এই বিষয়েও উপরের আলোচনার মাধ্যমে আশা করি আপনারা জানতে পেরেছেন।
Gmail, Yahoo, Outlook এগুলো হলো এক একটি ইমেইল সেবাদাতা, যেগুলোতে গিয়ে আপরা ইমেইল আইডি খুলতে পারি।
এখন যদি কথা আসে, গুগল একাউন্ট আর জিমেইল একাউন্ট কি একই?
তাহলে এর উত্তর হলো, একটি জিমেইল একাউন্ট তৈরি করলে সেটাই আপনার গুগল একাউন্ট হিসেবে বিবেচিত হবে। সুতরাং Gmail account এবং Google account হলো একই।
নতুন ইমেইল আইডি খোলার নিয়ম – (ইমেইল আইডি কিভাবে খুলবো)
ইমেইল একাউন্ট তৈরি করার জন্য সেরা তিনটি email service provider এর বিষয়ে আমি উপরে ভালোভাবে আপনাদের বলে দিয়েছি।
এখন আপনি কোন service provider ব্যবহার করে ইমেইল আইডি খুলবেন সেটা নির্ভর করবে আপনার পছন্দের উপর।
তবে বর্তমান বিশ্বে যতগুলো email user আছেন, তার বেশিরভাগই ইমেইল এড্রেস তৈরী করার জন্য Gmail ব্যবহার করে থাকেন।
কেননা, জিমেইল মানুষের কাছে এতটাই বেশি জনপ্রিয় যে, অধিকাংশ মানুষ-ই ইমেইল এবং জিমেইল একাউন্টকে একই মনে করে থাকেন।
আপনি অনেক সহজেই কোন প্রকার ঝামেলা ছাড়াই জিমেইল একাউন্ট খুলতে পারবেন।
নিচে একটি জিমেইল একাউন্ট খোলার নিয়ম স্টেপ বাই স্টেপ আমি আপনাদের বলে দিবো।
জিমেইল আইডি খোলার নিয়ম
স্টেপ ১:
সবচেয়ে প্রথমে আপনার ডিভাইসে (computer বা mobile) ইন্টারনেট কানেকশন চালু করে নিতে হবে।
এরপর আপনাকে একটি ওয়েব ব্রাউজার open করতে হবে। এক্ষেত্রে আপনি Google Chrome ব্রাউজারটি ওপেন করে নিবেন।
এরপর আপনাকে gmail.com এর ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে।
স্টেপ ২:
জিমেইল এর ওয়েবসাইটে যাওয়া পর আপনি Gmail account এ প্রবেশের জন্য Login page দেখতে পারবেন।
এখানে একটু নিচে “Creat account” এর লিংকে আপনাকে ক্লিক করতে হবে।
স্টেপ ৩:
Creat account এ click করার পর আপনারা কয়েকটি অপশন দেখতে পারবেন।
এদের মধ্যে for my personal use অপশনটি select করতে হবে।
স্টেপ ৪:
এরপর গুগল একাউন্ট খোলার পেজ আপনি দেখতে পারবেন।
এখানে First name এবং Last name এর বক্সে আপনার নাম সঠিকভাবে দিয়ে দিবেন।
এরপর নিচে Username নামে একটি বক্স দেখতে পারবেন।
মনে রাখবেন, এখানে আপনি যে ইউজারনেম দিবেন, সেটাই হবে আপনার email address। যার মাধ্যমে পরবর্তীতে আপনি mail আদান প্রদান করতে পারবেন।
ইউজারনেম এ যদি আপনি কেবল নিজের নাম কিংবা এরকম দুইটি বা একটি শব্দ বসালে সফলভাবে ইউজারনেম সেট করতে পারবেন না, অথবা সেই ইউজারনেমটি available থাকবে না।
কারণ, ইতোমধ্যে সেই ইউজারনেমটি দিয়ে মানুষ জিমেইল একাউন্ট তৈরি করে ফেলেছেন।
তাই username সেট করার সময় আপনার নামের সাথে অন্য কোন uncommon word কিংবা কয়েকটি সংখ্যা দিতে হবে। যেমন: shafiq502, abushafiqme ইত্যাদি।
ইউজারনেম সঠিকভাবে দেওয়ার পর নিচে আপনাকে পাসওয়ার্ড সেট করতে বলা হবে।
আপনি অবশ্যই আপনার জিমেইল একাউন্টে দকটি শক্তিশালী এবং ইউনিক পাসওয়ার্ড সেট করবেন।
পাসওয়ার্ড এমনভাবে দিবেন, যাতে কেউ সহজে সেটা আন্দাজ করতে না পারে। আর এতে আপনার জিমেইল একাউন্ট হ্যাক হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে না।
পাসওয়ার্ডে অবশ্যই ছোট হাতের এবং বড় হাতের অক্ষর একসাথে ব্যবহার করবেন এবং সংখ্যা ও বিশেষ কিছু চিহ্ন ব্যবহার করবেন। যেমন: [email protected]#Shafiq100++
সবগুলো বক্স পূরণ করার পর Next বাটনে ক্লিক করতে হবে।
স্টেপ ৫:
এরপরের পেজে আপনাকে mobile number দিতে বলা হবে। এখানে অবশ্যই আপনার সচল মোবাইল নম্বর প্রদান করতে হবে।
স্টেপ ৬:
মোবাইল নম্বর দেওয়ার পর আপনাকে recovery email address দিতে বলা হবে।
মনে রাখবেন, এখানে আপনি যেই ইমেইল এড্রেসটি দিবেন, সেটা ভবিষ্যতে আপনার জিমেইল একাউন্টে কোন ধরনের সমস্যা হলে কাজে লাগবে।
যেমন, আপনি যদি একাউন্টের পাসওয়ার্ড ভুলে যান, তাহলে রিকভারি ইমেইল এর মাধ্যমে আপনার পাসওয়ার্ড রিসেট করতে পারবেন।
স্টেপ ৭:
এরপর আপনার date of birth বা জন্ম তারিখ দিতে বলা হবে। এখানে আপনার অরিজিনাল জন্ম তারিখ দেওয়ার চেষ্টা করবেন।
তবে, এমনভাবে জন্ম তারিখ দিবেন, যাতে আপনার বয়স ১৮ বছর কিংবা এর চেয়ে বেশি হয়। এরপর Next এ ক্লিক করতে হবে।
স্টেপ ৮:
এখন গুগলের একটি terms and privacy পেজ দেখতে পারবেন। এখান থেকে I agree বাটনে ক্লিক করতে হবে।
উপরের step -গুলো সঠিকভাবে সম্পন্ন করার পর আপনার জিমেইল আইডি তৈরী হয়ে যাবে এবং সরাসরি আপনার Gmail এর inbox এ নিয়ে যাওয়া হবে।
এরপর আপনি জিমেইল এর যাবতীয় সুযোগ সুবিধা উপভোগ করতে পারবেন।
- মোবাইল থেকে ইমেইলে ছবি পাঠানোর নিয়ম
- কিভাবে গুগল একাউন্ট ডিলিট করবেন ?
- জিমেইল পাসওয়ার্ড ভুলে গেলে করণীয় কি ?
- জিমেইল পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করার নিয়ম
ইয়াহুতে ইমেইল আইডি খোলার নিয়ম
বিশ্বব্যপী জনপ্রিয় সাইটগুলোর অনেকগুলোই আমাদের চেনা। যেমন, ইয়াহু মেইল, জিমেইল, হটমেইল ইত্যাদি সার্ভিস। আমাদের পরিচিত অনেকেরই এ সার্ভিসগুলোতে ইমেইল ঠিকানা রয়েছে।
এখন কম্পিউটারের মাধ্যমে ইন্টারনেটে যুক্ত হতে হবে। তোমার কম্পিউটারের ব্রাউজারটি চালু করে। পছন্দের সেবাদাতা সাইটটিতে প্রবেশ করতে হবে।
সব সাইটেই প্রবেশের পর আমাদের নতুন ইমেইল ঠিকানা (Account) খুলতে সাইন আপ (Sign up) বা নিবন্ধন করতে হবে।
এ সাইন আপের নিয়ম সব সাইটেই কিছুটা ব্যতিক্রম ছাড়া প্রায় একই। সব সাইটেই একটা ফর্ম পূরণ করতে হয়। ফর্ম পূরণ করা অত্যন্ত সহজ।
সাইটটির নির্দেশনা অনুসরণ করে শেষে “Create Account” এ ক্লিক করলেই হয়ে গেল ইমেইল একাউন্ট বা ঠিকানা। আইডি (ID) এবং পাসওয়ার্ডটি (Password) গোপনীয়ভাবে সংরক্ষণ করতে হবে।
অন্যথায় যে কেউ আপনার একাউন্টে প্রবেশ করতে পারবে। ইমেইল খোলার সময় ফরম পূরণ করতে যে সকল তথ্য প্রয়োজন হয় এবং তা খোলার প্রক্রিয়া উল্লেখ করা হলো। এক্ষেত্রে আমরা উদাহরণস্বরূপ ইয়াহু ওয়েবসাইটটি ব্যবহার করছি।
জনপ্রিয় সাইট ইয়াহুতে ইমেইল খোলার জন্য যা করতে হবে:
(১) ইয়াহুর ওয়েবসাইটে যেতে হবে: http://www.yahoo.com
(২) “Mail” লেখার উপর ক্লিক করতে হবে।
(৩) নিচের দিকে যেখানে “Create Account” লেখা সেখানে ক্লিক করতে হবে। Create Account – এ ক্লিক করলে একটি ফরম আসবে।
(৪) এই ফরমটি সঠিকভাবে পূরণ করতে হবে।
এটির সকল তথ্য ইংরেজিতে দিতে হবে:
(ক) First name লেখা বক্সে নামের প্রথম অংশ লিখতে হবে এবং Last name লেখা বক্সে নামের শেষ অংশ লিখতে হবে।
(খ) Yahoo username লেখা বক্সে আপনার Yahoo ID দিতে হবে।
(i) আইডি লেখা বর্ণ দিয়ে শুরু করতে পার এবং আইডির দৈর্ঘ্য ৪-৩২ Character- এর মধ্যে হওয়া বাঞ্ছনীয়। আইডি – তে বর্ণ, সংখ্যা, আন্ডারস্কোর (_) এবং ডট (.) ব্যবহার করতে পারবেন।
(ii) আপনার আইডিটি সহজ – সরল ও বোধগম্য রাখার চেষ্টা করবেন।
(iii) আইডি লেখার নমুনা: মনে করুন, একজন শিক্ষার্থীর নাম আনিকা। Anika -র Yahoo ID হতে পারে: anika_rangpur তাহলে Anika -র Yahoo Mail Account এর ঠিকানা হবে: [email protected]
(খ) পাসওয়ার্ড টাইপ করুন:
(i) ৬ থেকে ৩২ টি বর্ণ, সংখ্যা ও বিশেষ চিহ্নের মধ্যে পাসওয়ার্ডের দৈর্ঘ্য সীমাবদ্ধ রাখতে হবে। পাসওয়ার্ডের ক্ষেত্রে ইংরেজি Small Letter এবং Capital Letter আলাদা বর্ণ হিসাবে বিবেচিত হবে।
কোন জায়গার নাম, ব্যক্তির নাম বা ইয়াহু আইডি পাসওয়ার্ড হিসাবে না রাখাই ভালো।
(ii) পাসওয়ার্ডকে সুরক্ষিত করতে পাসওয়ার্ডে ব্যবহার করতে পারেন –
- বর্ণ ও সংখ্যা
- বিশেষ ক্যারেকটার (যেমন, @)
- Small Letter ও Capital Letter এর মিশ্রণ
(iii) পাসওয়ার্ড টাইপ হয়ে গেলে পর্যায়ক্রমে নিচের কাজগুলো করতে হবে –
- কান্ট্রি নির্বাচন করে মোবাইল নম্বর টাইপ করুন।
- আপনার জন্মতারিখ সিলেক্ট করুন – এক্ষেত্রে প্রথমে মাস, তারপর দিন এবং সর্বশেষে বছর নির্বাচন করতে হবে।
- জেন্ডার সিলেক্ট করুন। এরপর বিকল্প রিকভারি নাম্বার (কোন কারণে ইমেইল ID ভুলে গেলে) দিতে হবে এবং এর জন্য কান্ট্রি নির্বাচন করে মোবাইল নম্বর টাইপ করতে হবে
- এই মোবাইল ব্যবহারকারীর সাথে আপনার সম্পর্ক টাইপ করতে হবে।
- সবশেষে Create Account বাটনে ক্লিক করতে হবে।
হয়ে গেলো আপনার ইমেইল একাউন্ট খোলা।
তবে আপনাদের মনে রাখতে হবে, ইয়াহু -তে ইমেইল একাউন্ট খোলার জন্য একইরকম ফরম সবসময় ব্যবহৃত হয়না। ইয়াহু কর্তৃপক্ষ ইমেইল একাউন্ট খোলার ফরমটি মাঝে মাঝে পরিবর্তন করে থাকে।
ইয়াহুতে মেইল পাঠানো
ইমেইল পাঠাতে হলে ইন্টারনেট ব্রাউজার চালু করে যে ওয়েবসাইটে আপনার ইমেইল ঠিকানা রয়েছে সেটিতে প্রবেশ করতে হবে।
এক্ষেত্রে ইয়াহু মেইল ব্যবহার করে কিভাবে একটি ইমেইল পাঠানো যায় তার প্রক্রিয়া উল্লেখ করা হলে।
(১) প্রথমে ব্রাউজার চালু করে ইয়াতু সাইটে Mail লেখা জায়গায় ক্লিক করুন।
(২) আপনার ইয়াহু আইডি ও পাসওয়ার্ড লিখে Sign In এ ক্লিক করুন।
(৩) এখন Compose লেখা জায়গায় ক্লিক করে একটু অপেক্ষা করতে হবে।
(৪) To -তে আপনি যাকে ইমেইল পাঠাবেন, তার ইমেইল ঠিকানা টাইপ করতে হবে।
(৫) এখন Send- এ ক্লিক করলে আপনার মেইলটি চলে যাবে।
FAQ
একটি নতুন ইমেইল আইডি খুলতে কত সময় লাগবে ?
ইমেইল আইডি খোলার স্টেপগুলো জানা থাকলে আপনি মোবাইল বা কম্পিউটার ব্যবহার করে মাত্র ৫ থেকে ১০ মিনিটের মধ্যেই একটি ইমেইল একাউন্ট তৈরী করতে পারবেন।
একটি মোবাইল নম্বর ব্যবহার করে একাধিক ইমেইল আইডি খোলা যাবে ?
হ্যাঁ, একটি মোবাইল নম্বর দিয়ে আপনি একের অধিক ইমেইল আইডি খুলতে পারবেন।
ইমেইল আর জিমেইল কি একই ?
ইমেইল আর জিমেইল বলতে একই জিনিসকে বোঝায় না। জিমেইল হলো গুগলের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত একটি ইমেইল সেবাদাতা কোম্পানি।
আমাদের শেষ কথা
তাহলে বন্ধুরা, একটি নতুন ইমেইল আইডি কিভাবে খুলবো এ বিষয়ে আজকের আর্টিকেলে step by step আলোচনা করা হয়েছে।
আশা করি আর্টিকেলটি পড়ার পর আপনারা How to creat a email account এই বিষয়ে ভালো করে জানতে পেরেছেন।
যদি আর্টিকেলটি আপনার ভালো লাগে তাহলে সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করবেন। আর আর্টিকেলের সাথে জড়িত কোন প্রশ্ন থাকলে অবশ্যই নিচে কমেন্ট করবেন।
অবশ্যই পড়ুন: