জীবন সঙ্গীত কবিতার কবি কে ?
জীবন সঙ্গীত কবিতার কবি কে?
উত্তর : জীবন সঙ্গীত কবিতার কবি হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়।
হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়
কবি পরিচিতি : হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় ১৮৩৮ সালের ১৭ই এপ্রিল হুগলি জেলার গুলিটা রাজবল্লভহাট গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা কৈলাশচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়। হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতার খিদিরপুর বাংলা স্কুলে পড়াশোনাকালে আর্থিক সংকটে পড়েন। ফলে তাঁর পড়াশোনা তখন বন্ধ হয়ে যায়। অতঃপর কলকাতা সংস্কৃত কলেজের অধ্যক্ষ প্রসন্নকুমার সর্বাধিকারীর আশ্রয়ে তিনি ইংরেজি শেখেন। পরবর্তীকালে হিন্দু কলেজে সিনিয়র স্কুল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। পরে তিনি ১৮৫৯ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। কর্মজীবনে তিনি সরকারি চাকরি, স্কুল-শিক্ষকতা এবং পরিশেষে আইন ব্যবসায় নিয়োজিত হন। মাইকেল মধুসূদন দত্তের পরে কাব্য রচনায় তিনিই ছিলেন সবচেয়ে খ্যাতিমান | স্বদেশপ্রেমের অনুপ্রেরণায় তিনি বৃত্রসংহার নামক মহাকাব্য রচনা করেন। এছাড়া তাঁর উল্লেখযোগ্য কাব্য : চিন্তাতরঙ্গিনী, বীরবাহু, আশাকানন, ছায়াময়ী ইত্যাদি। ২৪শে মে ১৯০৩ সালে হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় মৃত্যুবরণ করেন।

জীবন সঙ্গীত কবিতার কবি কে?
উত্তর : জীবন সঙ্গীত কবিতার কবি হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়।
জীবন সঙ্গীত
বলো না কাতর স্বরে বৃথা জন্ম এ সংসারে
এ জীবন নিশার স্বপন,
দারা পুত্র পরিবার , তুমি কার কে তোমার
বলে জীব করো না ক্রন্দন;
মানব-জনম সার , এমন পাবে না আর
বাহ্যদৃশ্যে ভুলো না রে মন;
কর যত্ন হবে জয় , জীবাত্মা অনিত্য নয়
ওহে জীব কর আকিঞ্চন ।
করো না সুখের আশ , পরো না দুখের ফাঁস,
জীবনের উদ্দেশ্য তা নয়,
সংসারে সংসারী সাজ, করো নিত্য নিজ কাজ,
ভবের উন্নতি যাতে হয় ।
দিন যায় ক্ষণ যায়, সময় কাহারো নয়,
বেগে ধায় নাহি রহে স্থির,
সহায় সম্পদ বল , সকলি ঘুচায় কাল
আয়ু যেন শৈবালের নীর ।
সংসার-সমরাঙ্গনে যুদ্ধ কর দৃঢ় পণে,
ভয়ে ভীত হইও মানব;
কর যুদ্ধ বীর্যবান, যায় যাবে যাক প্রাণ
মহিমাই জগতে দূর্লভ ।
মনোহর মূর্তি হেরে, ওহে জীব অন্ধকারে,
ভবিষ্যতে করো না নির্ভর;
অতীত সুখের দিন , পুনঃ আর ডেকে এনে,
চিন্তা করে হইও না কাতর ।
মহাজ্ঞানী মহাজন, যে পথে করে গমন,
হয়েছেন প্রাতঃস্মরণীয়,
সেই পথ লক্ষ্য করে স্বীয় কীর্তি ধ্ব্জা ধরে
আমরাও হব বরণীয় ।
সমর-সাগর-তীরে , পদাঙ্ক অঙ্কিত করে
আমরাও হব হে অমর;
সেই চিহ্ন লক্ষ করে, অন্য কোনো জন পরে,
যশোদ্বারে আসিবে সত্বর ।
করো না মানবগণ, বৃথা ক্ষয় এ জীবন
সংসার সমরাঙ্গন মাঝে;
সঙ্কল্প করেছ যাহা, সাধন করহ তাহা,
রত হয়ে নিজ নিজ কাজে ।
দিন যায়, ক্ষণ যায়, সময় কাহারো নয়,
বেগে ধায়, নাহি রহে স্থির,
সহায় সম্পদ বল, সকলি ঘুচায় কাল,
আয়ু যেন শৈবালের নীর ।
জাতি-দেশ-বর্ণ ভেদ ধর্ম ভেদ নাই ।
শিশুর হাসির কাছে, সবি প’ড়ে থাকে পাছে,
যেখানে যখন দেখি তখনি জুড়াই।
জীবন সঙ্গীত কবিতার কবি কে
জীবন সঙ্গিত কবিতার কবি পরিচিতি
পাঠ-পরিচিতি: জীবন কেবল নিছক স্বপ্ন নয়। কাজেই এ পৃথিবীকে শুধু স্বপ্ন ও মায়া জগৎ বলা যায় না। স্ত্রী-পুত্র-কন্যা এবং পরিজনবর্গ কেউ কারও নয়, একথাও ঠিক নয়। মানব জন্ম অত্যন্ত মূল্যবান। মিথ্যা সুখের কল্পনা করে দুঃখ বাড়িয়ে লাভ নেই তা আমাদের জীবনের উদ্দেশ্যও নয়। সংসারে বাস করতে হলে সংসারের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে হবে। কেননা বৈরাগ্যে মুক্তি নেই আমাদের জীবন যেন শৈবালের শিশিরবিন্দুর মতো ক্ষণস্থায়ী। সুতরা মানুষকে এ পৃথিবীতে সাহসী যোদ্ধার মতো সংগ্রাম করে বেঁচে থাকতে হবে। মহাজ্ঞানী ও মহা ব্যক্তিদের পথ অনুসরণ করে আমাদেরও বরণীয় হতে হবে। কেননা জীবন তো একবারই নেতিবাচকতা পরিহারপূর্বক মহামানবের পদচিহ্ন অনুসরণ করে জীবনপাঠের দীক্ষা গ্রহণের কথ কবিতাটিতে প্রকাশিত হয়েছে। ‘জীবন সঙ্গীত’ কবিতাটি মার্কিন কবি ‘Henry Wadsworth Longfellow’- (১৮০৭-১৮৮২) এর ‘A Psalm of life’ শীর্ষক ইংরেজি কবিতার ভাবানুবাদ ।
জ্ঞানমূলক প্রশ্ন ও উত্তর
প্রশ্ন- জীবন সঙ্গীত কবিতার কবি কে?
উত্তর :জীবন সঙ্গীত কবিতার কবি হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়
■ কবি-পরিচিতি
প্রশ্ন-১. হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় কত সালে জন্মগ্রহণ করেন?
উত্তর: হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় ১৮৩৮ সালে জন্মগ্রহণ করেন।
প্রশ্ন-২. হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় কোথায় জন্মগ্রহণ করেন?
উত্তর: হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় হুগলি জেলার গুলিটা রাজবল্লভহাট গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
প্রশ্ন-৩. হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের পিতার নাম কী?
উত্তর: হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের পিতার নাম কৈলাশচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় ।
প্রশ্ন-৪. হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় কত সালে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন?
উত্তর: হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় ১৮৫৯ সালে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন ।
প্রশ্ন-৫. মাইকেল মধুসূদন দত্তের সমসাময়িককালে তাঁর পরে কাব্য রচনায় কে সবচেয়ে খ্যাতিমান ছিলেন?
উত্তর: মাইকেল মধুসূদন দত্তের সমসাময়িককালে তাঁর পরে হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় কাব্য রচনায় সবচেয়ে খ্যাতিমান ছিলেন ।
প্রশ্ন-৬. স্বদেশপ্রেমের অনুপ্রেরণায় হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় কোন মহাকাব্য রচনা করেন?
উত্তর: স্বদেশপ্রেমের অনুপ্রেরণায় হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় ‘বৃত্রসংহার’রচনা করেন?
প্রশ্ন-৭.কবি হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত মহাকাব্যের নাম কী?
উত্তর: কবি হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় রচিত মহাকাব্যের নাম ‘বৃত্রসংহার’।
প্রশ্ন-৮, ‘ছায়াময়ী’ কাব্যগ্রন্থটি কার লেখা?
উত্তর: ‘ছায়াময়ী’ কাব্যগ্রন্থটি হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা।
প্রশ্ন-৯. হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় কত সালে মৃত্যুবরণ করেন?
উত্তর: হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় ১৯০৩ সালে মৃত্যুবরণ করেন।
[ জীবন সঙ্গীত কবিতার কবি কে? ]
মানুষ কবিতাটি কোন কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত?
বঙ্গবাণী কবিতায় নিরঞ্জন শব্দটি কী অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে?
বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী রচনা – (মুজিববর্ষ)
জ্ঞান মূলক প্রশ্ন 🙁মূলপাঠ )
প্রশ্ন-১০. কবি ‘তুমি কার কে তোমার’ বলে জীবকে কী করতে নিষেধ করেছেন?
উত্তর: কবি ‘তুমি কার কে তোমার’ বলে জীবকে ক্রন্দন করতে নিষেধ করেছেন ।
প্রশ্ন-১১. কবি হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় মনকে কীসে ভুলতে নিষেধ করেছেন?
উত্তর: কবি হেমচন্দ্র মনকে বাহ্যদৃশ্যে ভুলতে নিষেধ করেছেন।
প্রশ্ন-১২. কবি সুখের আশা করে কীসের ফাঁস পরতে নিষেধ করেছেন?
উত্তর: কবি সুখের আশা করে দুখের ফাঁস পরতে নিষেধ করেছেন।
প্রশ্ন-১৩. জীবনের উদ্দেশ্য কী নয়? (সি. বো. ১৯)
উত্তর: সুখের আশায় বিপদ ডেকে আনা জীবনের উদ্দেশ্য নয়।
প্রশ্ন-১৪, আয়ুকে কবি কীসের সঙ্গে তুলনা করেছেন?
উত্তরা: আয়ুকে কবি শৈবালের নীরের সঙ্গে তুলনা করেছেন।
প্রশ্ন-১৫. আমাদের জীবন কীসের মতো ক্ষণস্থায়ী ?
উত্তরা: আমাদের জীবন শৈবালের নীরের মতো ক্ষণস্থায়ী।
প্রশ্ন-১৬. ‘জীবন-সঙ্গীত’ কবিতায় কবি কোথায় যুদ্ধ করতে বলেছেন?
উত্তরা: ‘জীবন-সঙ্গীত’ কবিতায় কবি সংসার-সমরাজানে বলেছেন।
সুভার গ্রামের নাম কী ? সুভা গল্পের জ্ঞানমূলক প্রশ্ন
সুভা গল্পের সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর – (গুরুত্বপূর্ণ ১৫টি)
বহিপীর নাটক কত সালে প্রকাশিত হয়? বহিপীর নাটকের জ্ঞানমূলক