তথ্যপ্রযুক্তি কি ? তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার, গুরুত্ব এবং ভবিষ্যত
তথ্যপ্রযুক্তি কি বা ইনফরমেশন টেকনোলজি কি? আইসিটি কি (What Is ICT In Bengali)

একবিংশ শতাব্দীর এ পৃথিবীকে বলা হচ্ছে প্রযুক্তিনির্ভর পৃথিবী। কারণ প্রযুক্তি এখন মানুষের হাতের নাগালে। তথ্য সংগ্রহে বইনির্ভরতা জনপ্রিয়তা হারিয়েছে বেশ ক বছর আগেই।
সে স্থান দখল করেছে কম্পিউটার, মোবাইল, ট্যাবলেটসহ আরও অত্যাধুনিক সব ডিভাইস।
এখন তথ্য সংগ্রহের মূল কাজ চলে ইন্টারনেট থেকে। ইন্টারনেটের বদৌলতে সারা পৃথিবী এখন মানুষের তালুবন্দি। বলা হচ্ছে, পৃথিবীর সকল সভ্য মানুষ প্রযুক্তির এ বিপ্লবে শামিল হবে। তথ্য পৌঁছে যাবে সবার পকেটে।
তথ্যপ্রযুক্তি কি বা কাকে বলে ? (What Is ICT In Bengali)
তথ্য ও প্রযুক্তি দুটি শব্দের মেলবন্ধনে একটি সামগ্রিক ধারণা আমাদের সামনে ফুটে ওঠে। আধুনিক পদ্ধতি ব্যবহার করে তথ্য সংরক্ষণ, সরবরাহ, সংযোজন, বিয়োজন করাই হলো তথ্যপ্রযুক্তি।
এ বিষয়টির মাধ্যমে পৃথিবীর সকল তথ্যকে শৃঙ্খলার মধ্যে আনা হয়। কারণ তথ্যই সম্পদ আর এ সম্পদের সঠিক ব্যবহার করতে শৃঙ্খলা অত্যাবশ্যক। সামগ্রিক তথ্যকে আধুনিক নানা দৃষ্টিকোণ থেকে প্রয়োজনমাফিক মানুষের সামনে পরিবেশন করাই তথ্যপ্রযুক্তির কাজ।
তথ্যপ্রযুক্তির উৎকর্ষে ডিজিটাল কম্পিউটারের ভূমিকা
ডিজিটাল কম্পিউটারই তথ্যপ্রযুক্তিতে সমগ্র বিশ্বে বিপ্লব ঘটিয়েছে । আধুনিক জীবনযাপনের প্রায় সর্বাংশ জুড়েই রয়েছে কম্পিউটারের অস্তিত্ব। শিল্প, সাহিত্য, বিনোদন, ব্যবসা সবই এখন কম্পিউটারের ওপর নির্ভরশীল।
শিক্ষার ব্যাপক উন্নতি সাধিত হয়েছে ডিজিটাল কম্পিউটারের সামগ্রিক বিস্তৃতির কারণে। ই কমার্সের বদৌলতে পৃথিবীব্যাপী পণ্যের যে সম্ভার সৃষ্টি হয়েছে তা কম্পিউটারের কারণেই সম্ভব হয়েছে।
You may also like: দারাজ অনলাইন শপিং এর সবকিছু বাংলাতে
বর্তমান সময়ে কম্পিউটারই মানুষকে সৃজনশীল হতে প্রেরণা জোগাচ্ছে।
তথ্যপ্রযুক্তি এবং ইন্টারনেট (Information Technology and Internet)

বিশ্বব্যাপী আজ যে কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সৃষ্টি হয়েছে তার মূল কারিগর ইন্টারনেট।
You may also like: ইন্টারনেট কি ? ইন্টারনেটের ইতিহাস, ব্যবহার এবং গুরুত্ব
ইন্টারনেটের মাধ্যমেই আমরা জুড়ে যাচ্ছি সমগ্র পৃথিবীর কম্পিউটারের সাথে। সাধারণ কোনো তথ্যের জন্য এখন ইন্টারনেটের বিকল্প নেই।
খবরের কাগজ, গবেষণা জার্নালসহ নানা পুস্তকাদি মানুষ এখন ইন্টারনেট ব্যবহার করেই পড়ে থাকে। কেনাকাটার সবচেয়ে বড়ো মাধ্যম এখন ইন্টারনেট।
ফেসবুক, টুইটার, স্কাইপ, হোয়াটসঅ্যাপ (Facebook, Twitter, Skype, Whatsapp) ইত্যাদির কল্যাণে বন্ধুত্ব, আড্ডাসহ সামাজিক যোগাযোগ এখন ইন্টারনেটনির্ভরতার পর্যায়ভুক্ত।
বিজ্ঞাপন বা নির্বাচনি প্রচারণা চালানোর জন্য এখন ইন্টারনেটের সাহায্য নেওয়া হয়।
দূর দূরান্তে মানুষের নানা অজানা বিষয় আজ ইন্টারনেটের বদৌলতেই আলোর দেখা পাচ্ছে।
এককথায় বলতে গেলে সরল কিংবা জটিল , সহজ কিংবা কঠিন , গুরুত্বপূর্ণ কিংবা তুচ্ছ, সব কাজই এখন ইন্টারনেট ব্যবহার করে করা হচ্ছে। যত দিন যাচ্ছে এর ব্যবহার তত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
বিজ্ঞানী, সাহিত্যিক, শিল্পীসহ নানা মানুষ তাদের যাবতীয় সৃষ্টিকর্মের কথা উপস্থাপন করছে ইন্টারনেটের মাধ্যমে।
মোবাইল ফোন ও তথ্যপ্রযুক্তি মোবাইল ফোন এখন মানুষের হাতে হাতে। এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, বর্তমানে টুথব্রাশ ব্যবহারকারীর চেয়ে মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেশি।
তথ্যপ্রযুক্তির ব্যাপক প্রসারে মোবাইল ফোন অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। বর্তমানে মোবাইল ফোনের ব্যবহার শুধু কথা বলার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকেনি।
স্মার্ট মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তথ্য আদান প্রদানের যাবতীয় কাজ করা সম্ভব হচ্ছে। মোবাইল ফোনকে মানুষ অনেক ক্ষেত্রেই কম্পিউটারের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করছে।
ফলে তথ্য নিমেষেই মানুষের হাতের তালুতে বন্দি হয়ে যাচ্ছে।
তথ্যপ্রযুক্তির গুরুত্ব – (Importance of ICT)
তথ্যই মানুষের সকল জ্ঞানের উৎস। তাই তথ্যের প্রবাহকে কোনোভাবেই অস্বীকার করা যায় না। তথ্যের মাধ্যমেই মানুষ অজানাকে জেনে সমৃদ্ধ হয়। মানুষের ভেতরের জ্ঞানস্পৃহাকে তথ্যের মাধ্যমেই সন্তুষ্ট করা সম্ভব। যেকোনো সমস্যাকে এখন সমস্যা হিসেবে না দেখে সম্ভাবনা হিসেবে দেখা হয়। তা সম্ভব হয়েছে তথ্যপ্রযুক্তির এই অবাধ প্রবাহের কারণেই।
তাই একবিংশ শতাব্দীর মানুষের জীবনে তথ্যপ্রযুক্তির গুরুত্ব অপরিসীম।
তথ্যপ্রযুক্তির ভবিষ্যৎ – (Future Scope of ICT)
দিন দিন তথ্যপ্রযুক্তি উৎকর্ষের পথ ধরেই হাঁটছে। যেভাবে এসময়ে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার হচ্ছে, ঠিক সেভাবেই বা তার চেয়ে উন্নততরভাবে ভবিষ্যতে তথ্যপ্রযুক্তিকে ব্যবহার করা হবে। আজ যাকে অসম্ভব বলে বোধ হচ্ছে কাল হয়তো তাকেই তথ্যপ্রযুক্তির বদৌলতে সম্ভব করা যাবে।
আশা করা যায়, পরবর্তীকালে তথ্যপ্রযুক্তি নিয়ে আরও উন্নততর গবেষণা হবে এবং মানুষের কল্যাণে তা ব্যবহৃত হবে।
You may also like: ওয়েব পেজ কাকে বলে
Conclusion
তথ্যপ্রযুক্তির ওপর নির্ভরতা মানুষকে নির্ভার করেছে বহুভাবে। হাতের মুঠোয় এনে দিয়েছে গোটা পৃথিবীকে। এ কারণে মানুষ আজ এত বেশি তথ্য সম্পৃক্ত। যার কাছে তথ্য নেই সে নির্ধনের কাতারে শামিল হচ্ছে। তথ্যপ্রযুক্তির উন্নয়নই পৃথিবীকে সমৃদ্ধি এনে দিচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও দেবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।
You Can Learn More About Information Technology On Wikipedia.