পদ্মা সেতু সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান – (সকল তথ্য ও MCQ)
পদ্মা সেতু সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান:
২২ জুন, ২০২২ তারিখে পদ্মা সেতু উদ্বোধন করা হয়। পদ্মা সেতু উদ্বোধন করে বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনা।
ব্রাজিলের আমাজন নদীর পর বিশ্বে খরস্রোতা নদীর তালিকায় ২য় স্থানে রয়েছে প্রমত্তা পদ্মা। গুণগত মানের দিক দিয়ে এই সেতু বিশ্বের অন্যতম সেতু।
কারণ এটি একই সাথে রেল এবং সড়ক দুটোই আছে, ভুমিকম্পের ঝুকি এড়াতে এতে সবচেয়ে বড় এবং শক্তিশালী পেন্ডুলাম বিয়ারিং ব্যবহার করা হয়েছে যার ১ টি বিয়ারিং এর ওজন ১০ হাজার ৫০০ টন। বিশ্বে কোনো দেশের সেতু তে এমন বিয়ারিং ব্যবহার করা হয়নি।
বাংলাদেশের দীর্ঘতম বহুল আলোচিত সেতু হলো পদ্মা সেতু। যার দৈর্ঘ্য ৬.১৫ কিমি, প্রস্থ ১৮.১০ কিমি। সেতুটিতে মোট ৪২ টি পিলার রয়েছে তার মধ্যে ২টি পিলার শক্তিশালী (১ম ১ নম্বর এবং ২য় টি হলো শেষের ৪২ টি নম্বর)। একটি পিলার থেকে আরেকটি পিলারের দুরত্ব ১৫০ মিটার।
তিনটি জেলার উপর দিয়ে পদ্মা সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে। এই সেতুর পাইল গুলো গোল গোল। মাটি থেকে পাইল ১২০- ১২২ মিটার গভীর। পৃথিবীতে অন্য কোনো দেশে এতো গভীরে পাইল বসানো হয়নি। প্রথমে মাওয়া, মাঝখানে মাদারিপুর এবং সব শেষে শরিয়তপুর। ৪১৫ টি লাম্পপোস্ট ব্যবহার করা করা হয়েছে। সেতুটির রঙ সোনালি ।
২০২২ সালের ২৫ শে জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজে মাওয়া প্রান্ত দিয়ে টোল প্রদান করে আনুষ্ঠানিক ভাবে পদ্মা সেতু উদ্ভবন করেন এবং এর মাধ্যমে সেতুটি উন্মুক্ত করা হয়। নির্মান কাজ শুরু হয় ২০১৪ সালের নভেম্বর মাসে। পদ্মা সেতু নির্মাণে খরচ হয়েছে ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা।
পদ্মা সেতু বাংলাদেশের পদ্মা নদীর ওপর দিয়ে নির্মাণ করা একটি সেতু। এই সেতু বাংলাদেশের দক্ষিণ – পশ্চিম অংশের সঙ্গে উত্তর – পূর্ব অংশের সংযোগ ঘটিয়েছে। এই সেতুকে কেন্দ্র করে মনে মনে স্বপ্ন বুনছে দক্ষিণ – পশ্চিয় অঞ্চলের মানুষ। সকলের আশা এই পদ্মা সেতু বদলে দেবে দেশের অর্থনীতি, উন্নত হবে মানুষের জীবনযাত্রা। স্বাধীনতা – উত্তর বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় এই প্রকল্প বাংলাদেশে খুলে দেবে নতুন সম্ভাবনার দুয়ার।
বাংলাদেশের ভৌগোলিক প্রেক্ষাপটে পদ্মা সেতুর গুরুত্ব
বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ। এদেশের বুক চিরে বয়ে চলেছে অসংখ্য নদ – নদী। তাই যাতায়াত ব্যবস্থায় আমাদের প্রতিনিয়তই নৌপথের আশ্রয় নিতে হয়। কিন্তু এই যোগাযোগ ব্যবস্থায় দীর্ঘসূত্রিতা ও মন্থর গতি পরিলক্ষিত হয়।
এই যাতায়াত ব্যবস্থাকে গতিশীল করার জন্য প্রয়োজন হয় সেতুর। সেতু থাকলে নদীর দুই পাড়ের মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থায় যেমন উন্নতি হয়, তেমনি ব্যবসায় – বাণিজ্য ভালো হওয়ায় মানুষের জীবনমানেরও উন্নয়ন ঘটে।
পদ্মা সেতু নির্মাণের প্রেক্ষাপট
পদ্মা সেতু দেশের দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন। এজন্য এই অঞ্চলের মানুষ স্বাধীনতা – উত্তর বাংলাদেশে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সরকারের কাছে তাদের দাবি বাস্তবায়নের কথা জানিয়ে এসেছে। অবশেষে এই সেতুর সম্ভাবনার কথা বিবেচনায় এনে ১৯৯৮ সালে প্রথম সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়।
সমীক্ষা যাচাইয়ের পর ২০০১ সালে এই সেতুর ভিত্তিপ্রস্তরও স্থাপন করা হয়। কিন্তু অর্থের জোগান না হওয়ায় সেতুর ভবিষ্যৎ অনিশ্চয়তার মুখে পড়ে। পরবর্তীকালে পদ্মা সেতু প্রকল্পের যাত্রা শুরু হয় ২০০৭ সালে। পরে ২০১১ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে এই সেতুতে রেলপথ সংযুক্ত করে।
পদ্মা সেতু নির্মাণে প্রতিবন্ধকতা ও বাংলাদেশের সক্ষমতা
পদ্মা সেতু স্বাধীনতা – উত্তর বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় প্রকল্প। বিভিন্ন সময় নানা প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হয়েছে এই প্রকল্প। ২০০৯ সালের পর বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতুতে অর্থায়নে আগ্রহ প্রকাশ করলে তাদের সঙ্গে ১২০ কোটি ডলারের ঋণচুক্তি হয়।
কিন্তু ২০১২ সালে ঋণচুক্তি বাতিল করে বিশ্বব্যাংক, অনিশ্চয়তার মুখে পড়ে পদ্মা সেতু প্রকল্প। পরবর্তীকালে সরকার নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের ঘোষণা দেয়। ষড়যন্ত্রের বাধা জয় করে এগিয়ে চলে পদ্মা সেতুর কাজ। নিজস্ব অর্থায়নে দৃশ্যমান হতে থাকে স্বপ্নের পদ্মা সেতু।
পদ্মা সেতুর বর্ণনা
পদ্মা সেতুই হলো বাংলাদেশের দীর্ঘতম সেতু। মূল সেতুর দৈর্ঘ্য হলো ৬.১৫ কিলোমিটার এবং প্রস্থ ২১.১০ মিটার। দ্বিতল এই সেতুটি ওপর দিয়ে চলবে যানবাহন এবং নিচে চলবে ট্রেন। সেতুটি নির্মিত হয়েছে কংক্রিট এবং স্টিল দিয়ে।
সেতুর দুই পাশে ১২ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক নির্মিত হয়েছে। নদীশাসনের জন্য চীনের সিনহাইড্রো করপোরেশন কাজ করেছে। আর দুই পাশের সংযোগ সড়ক ও অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য কাজ দেওয়া হয়েছে বাংলাদেশের অবদুল মোমেন লিমিটেডকে।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, বুয়েট এবং কোরিয়া এক্সপ্রেসওয়ে করপোরেশন অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস সেতুর নির্মাণকাজ তদারক করেছে। পদ্মা সেতুর রেল সংযোগ প্রকল্পে ১৪ টি নতুন স্টেশন নির্মাণ এবং ৬ টি বিদ্যমান স্টেশন উন্নয়ন ও অবকাঠামো নির্মাণ করা হবে।
মূল সেতুর পিলার সংখ্যা ৪২ টি। এর মধ্যে নদীর মধ্যে ৪০ টি ও নদীর দুই পাশে দুটি পিলার থাকবে। নদীর ভেতরের ৪০ টি পিলারে ৬ টি করে মোট ২৪০ টি পাইল থাকবে। এছাড়া সংযোগ সেতুর দুই পাশের দুটি পিলারে ১২ টি করে মোট ২৪ টি পাইল থাকবে।
পিলারের ওপর ৪১ টি স্প্যান থাকবে। ৩০ শে জুন পর্যন্ত পদ্মাসেতুর ১৪ টি স্প্যান বসানোর কাজ শেষ হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে সেতুটির ২.১ কিলোমিটার দৃশ্যমান হয়েছে। সোনালি রং সূর্যের তাপ কম শোষণ করে বলে পদ্মা সেতুর রং হবে সোনালি। মূল সেতুর কাজ পেয়েছে চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেড। ৩০ জুন, ২০১৯ পর্যন্ত মূল সেতুর বাস্তব কাজের ৮১ শতাংশ, নদী শাসন কাজের ৫৯ শতাংশ এবং প্রকল্পের সার্বিক কাজের ৭১ শতাংশ অগ্রগতি হয়েছে।
পদ্মা সেতু নির্মাণের সম্ভাব্য ব্যয়
২০০৭ সালে তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ১০ হাজার ১৬১ কোটি টাকার পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্প পাস করে। এরপর ২০১১ সালে প্রকল্পের সংশোধিত ব্যয় নির্ধারণ করা হয় ২০ হাজার ৫০৭ কোটি টাকা। এরপর ২০১৬ সালে পদ্মা সেতু নির্মাণের ব্যয় দ্বিতীয়বারের মতো সংশোধন করা হয়।
এসময় সম্ভাব্য ব্যয় নির্ধারিত হয় ২৮ হাজার ৭৯৩ কোটি টাকা। পরবর্তীতে আরও সংশোধনের পর এখন পদ্মাসেতুর দাঁড়িয়েছে ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা। প্রথম দিকে বিশ্বব্যাংক, এডিবি, জাইকা, আইডিবি এবং বাংলাদেশ নিজেদের সরিয়ে নিলে বাংলাদেশ সরকার নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।
সরকারের যৌথ অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু ২০১২ সালে বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতু প্রকল্প থেকে নিলে বাংলাদেশ সরকার নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।
পদ্মা সেতুর অর্থনৈতিক গুরুত্ব
পদ্মা সেতুর অর্থনৈতিক গুরুত্ব সুদূরপ্রসারী। এই সেতুর কাজ সম্পন্ন হলে দেশের দক্ষিণ – পশ্চিমাঞ্চলের প্রায় ২১ টি জেলার মানুষের ভাগ্য বদলে যাবে। কেননা এই সেতুর মাধ্যমে রাজধানীর সঙ্গে এই অঞ্চলের মানুষের সরাসরি সংযোগসাধন ঘটায় অর্থনীতি গতিশীল হবে। নিচে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে পদ্মা সেতুর গুরুত্ব তুলে ধরা হলো।
ক. শিল্পক্ষেত্রে পদ্মা সেতুর গুরুত্ব: পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হলে দেশের দক্ষিণ – পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে সরাসরি উত্তর – পূর্বাঞ্চলের যোগাযোগ ঘটবে। ফলে এই অঞ্চলে গড়ে উঠবে নতুন নতুন শিল্প খাত। তাছাড়া এই সেতুকে কেন্দ্র করে গতিশীল হবে পায়রা সমুদ্রবন্দর। ফলে ব্যবসায়ের সুবিধার্থে স্থাপিত হবে নতুন শিল্প কারখানা।
খ. কৃষিক্ষেত্রে পদ্মা সেতুর গুরুত্ব: বর্তমানে দক্ষিণ – পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে উত্তর – পূর্বাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো না থাকায় ওই অঞ্চলের মানুষ তাদের উৎপাদিত ফসলের ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হয়। সেতু নির্মাণের ফলে যাতায়াত ব্যবস্থা গতিশীল হবে। ফলে ওই অঞ্চলের কৃষকদের উৎপাদিত ফসল সহজেই দেশের বিভিন্ন স্থানে পৌছে যাবে। এতে কৃষকরা ফসলের ন্যায্য মূল্য পাবে।
গ. দারিদ্র্য বিমোচনে পদ্মা সেতুর প্রভাব: পদ্মা সেতু দেশের দক্ষিণ – পশ্চিম অঞ্চলের মানুষের দারিদ্র্য বিমোচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এই সেতু নির্মাণের ফলে যাতায়াত ব্যবস্থা উন্নত হওয়ায় সেখানে শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠবে। ফলে অনেক মানুষের কর্মসংস্থান হবে। তাছাড়া সহজেই ওই অঞ্চলের মানুষ কাজের জন্য অন্যান্য স্থানে যেতে পারবে। এতে বেকারদের কর্মসংস্থান হবে।
পরিবেশের ভারাসাম্য রক্ষায় পদ্মা সেতুর ভূমিকা
পদ্মা সেতু প্রকল্পকে কেন্দ্র করে নদীর দুই পাশে বিস্তীর্ণ এলাকায় নদীর পাড় বাঁধা হচ্ছে। ফলে ওই এলাকায় নদীভাঙন রোধ হবে। এছাড়া নদীর দুই পাশে এবং সংযোগ সড়কের রাস্তার দুই পাশে বৃক্ষরোপণ করা হচ্ছে। সবুজায়নের ফলে ওই এলাকা ময়ূকরণের হাত থেকে রক্ষা পাবে।
আবার বর্তমানে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ জ্বালানি হিসেবে কাঠ ব্যবহার করে বলে অবাধে বৃক্ষনিধন হয়। কিন্তু পদ্মা সেতু প্রকল্পের মাধ্যমে ওই অঞ্চলে বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংযোগ দেওয়া সহজ হবে। এতে মানুষের জ্বালানির চাহিদা পূরণ হবে। ফলে বৃক্ষনিধন কমে যাবে এবং পরিবেশের ভারসাম্য সুরক্ষিত হবে।
পদ্মা সেতু সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান – (সকল প্রশ্ন-উত্তর)
উপরে পদ্মা সেতু সম্পর্কে সম্পুর্ণ বর্ণনা দেওয়া হয়েছে। এখন আমরা পদ্মা সেতু সম্পর্কে সকল তথ্য জানব।
পদ্মা সেতু সম্পর্কে সকল সাধারণ জ্ঞান ২০২২ MCQ
১. পদ্মা সেতু প্রকল্পের নাম কী?
উত্তর: পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্প।
২. কত সালে পদ্মা সেতুর নকশা প্রণয়নের কাজ শুরু হয়?
উত্তর: ২০০৯ সালের ২রা ফেব্রুয়ারী।
৩. পদ্মা সেতু প্রকল্পে বিশ্বব্যাংকের সাথে কত কোটি ডলারের ঋণ চুক্তি হয়েছিল?
উত্তর: ১২০ কোটি ডলার।
৪. কত সালে পদ্মা সেতু প্রকল্পে বিশ্বব্যাংকের সাথে ঋণ চুক্তি হয়?
উত্তর: ২০১১ সালের এপ্রিল মাসে।
৫. সরকার কত সালে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে?
উত্তর: ২০১২ সালের ৯ই জুলাই।
৬. কত তারিখে পদ্মা সেতু উদ্বোধন করা হয়?
উত্তর: ২৫শে জুন, ২০২২ সালে।
৭. পদ্মা সেতু উদ্ভাবন করেন কে?
উত্তর: বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
৮. কত সালে পদ্মা সেতুতে রেলপথ সংযুক্তির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়?
উত্তর: ১১ জানুয়ারী, ২০১১ সালে।
৯. কত সালে বাংলাদেশ আনুষ্ঠানিকভাবে বিশ্বব্যাংকে চিঠি দিয়ে পদ্মা সেতু প্রকল্পে অর্থায়নের অনুরোধ ফিরিয়ে নেয়?
উত্তর: ২০১৩ সালের ৩১শে জানুয়ারী।
পদ্মা সেতু সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান ২০২২
১০. পদ্মা সেতু প্রকল্পের পরিচালক কে?
উত্তর: মো. শফিকুল ইসলাম।
১১. কোন দেশের কোম্পামি পদ্মা সেতু নির্মাণ করে?
উত্তর: চীনের কোম্পানি।
১৩. ২০২১-২২ অর্থবছরে সরকার পদ্মা সেতু প্রকল্পে কত কোটি টাকা বরাদ্ধ করে?
উত্তর: ৫ হাজার কোটি টাকা।
১৩. পদ্মা সেতুর নকশা করে কোন দেশের কোম্পানী এবং কোম্পানির নাম কী?
উত্তর: আমেরিকার এ.ই.সি.ও.এম (AECOM) কোম্পানী।
১৪. পদ্মা সেতু নির্মাণ ও নদী শাসন কাজের উদ্বোধন করেন কে এবং কত তারিখে?
উত্তর: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ১২ ডিসেম্বর, ২০১৫ সালে।
১৫. কোন কোম্পানী পদ্মা সেতু নির্মাণ করে?
উত্তর: চায়না রেলওয়ে গ্রুপ লিমিটেড এর আওতাধীন “চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানী।”
১৬. পদ্মা সেতু কি দিয়ে নির্মাণ করা হয়?
উত্তর: কংক্রিট এবং স্টিল দিয়ে।
১৭. পদ্মা সেতুর দৈর্ঘ্য কত কিলোমিটার?
উত্তর: পদ্মা সেতুর দৈর্ঘ্য ৬.১৫ কিলোমিটার (২০,২০০ ফুট)।
১৮. পদ্মা সেতুর প্রস্থ কত?
উত্তর: পদ্মা সেতুর প্রস্থ ১৮.১০ মিটার (৫৯.৪ ফুট)।
১৯. পদ্মা সেতু কত কিলোমিটার?
উত্তর: ৬.১৫ কিলোমিটার।
২০. পদ্মা সেতুর দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ কত কিলোমিটার?
উত্তর: পদ্মা সেতুর দৈর্ঘ্য ৬.১৫ কিলোমিটার ও প্রস্থ ১৮.১০ মিটার।
২১. পদ্মা সেতুর পিলার কয়টি?
উত্তর: পদ্মা সেতুর পিলার ৪২ টি।
২২. পদ্মা সেতু কোন জেলার অবস্থিত?
উত্তর: পদ্মা সেতু বাংলাদেশের পদ্মা নদীর উপর নির্মিত একটি বহুমুখী সড়ক ও রেল সেতু। এই সেতুর মাধ্যমে মুন্সিগঞ্জের লৌহজংয়ের সাথে শরীয়তপুর ও মাদারিপুর জেলার সংযোগ ঘটেছে।
২৩. পদ্মা সেতুর মোট স্প্যান কয়টি?
উত্তর: পদ্মা সেতুর মোট স্প্যানের সংখ্যা ৪১ টি।
২৪. পদ্মা সেতুর প্রতিটি স্প্যানের দৈর্ঘ্য কত মিটার?
উত্তর: ১৫০ মিটার।
২৫. পদ্মা সেতুর অবস্থান কয়টি জেলার উপর?
উত্তর: ৩টি।
পদ্মা সেতু সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান MCQ
২৬. পদ্মা সেতুর অবস্থান কোন ৩টি জেলার উপর?
উত্তর: মুন্সিগঞ্জ, শরীয়তপুর ও মাদারীপুর।
২৭. পদ্মা সেতুর সাথে সংযোগ হবে দেশের কোন অঞ্চল?
উত্তর: দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাংশের সাথে উত্তর-পূর্বাংশের অঞ্চল।
২৮. পদ্মা সেতুতে কি কি আছে?
উত্তর: পদ্মা সেতুতে রয়েছে দ্বিতল বিশিষ্ট উপরে চার লেনের সড়ক, মাঝখানে রোড ডিভাইডার এবং নিচে রেল লাইন। এছাড়া রয়েছে গ্যাস, বিদ্যুৎ ও অপটিক্যাল ফাইবার লাইন পরিবহনের সুবিধা।
২৯. পদ্মা সেতুর ভায়াডাক্ট কি?
উত্তর: পদ্মা সেতুর স্থলভাগের অংশকে বলা হয় ভায়াডাক্ট। ভায়াডাক্টে এসে যানবাহন ও ট্রেনের পথ আলাদা হয়ে মাটিতে মিশেছে।
৩০. পদ্মা সেতুর ভায়াডাক্ট কত কিলোমিটার?
উত্তর: ৩.১৮ কিলোমিটার।
৩১. পদ্মা সেতুর ভায়াডাক্টে কতটি পিলার আছে?
উত্তর: পদ্মা সেতুর ভায়াডাক্টে ৮১টি পিলার রয়েছে।
৩২. পানির স্তর থেকে পদ্মা সেতুর উচ্চতা কত ফুট?
উত্তর: ৬০ ফুট (১৮ মিটার প্রায়)।
৩৩. পদ্মা সেতুর মোট পাইলিংয়ের সংখ্যা কতটি?
উত্তর: ২৮৬ টি।
৩৪. পদ্মা সেতুর পাইলিং গভীরতা কত ফুট?
উত্তর: ৩৮৩ ফুট।
৩৫. পদ্মা সেতুর পাইলিং ও খুঁটির কিছু অংশে কোন দেশের সিমেন্ট ব্যবহার করা হয়েছে?
উত্তর: অস্ট্রেলিয়ার অতি মিহি সিমেন্ট।
৩৬. পদ্মা সেতুর পাইল সংক্রান্ত সমস্যার গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ প্রদান করে কোন প্রতিষ্ঠান?
উত্তর: কাউই (COWI), ব্রিটিশ পরামর্শক প্রতিষ্ঠান।
৩৭. পদ্মা সেতুর পাইলিং এর কাজে কোন দেশের হ্যামার ব্যবহার করা হয়?
উত্তর: জার্মানির মিউনিখে তৈরি বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী হাইড্রো হ্যামার ব্যবহার করা হয়।
৩৮. পদ্মা সেতুর পাইলিংয়ের কাজে ব্যবহৃত হাইড্রো হ্যামারের ওজন কত টন?
উত্তর: ৩৮০ টন।
৩৯. পদ্মা সেতুর পাইলিংয়ের কাজে ব্যবহৃত হাইড্রো হ্যামারের শক্তি কতটুকু ছিল?
উত্তর: সর্বোচ্চ ৩০০০ কিলোজুল শক্তিসম্পন্ন।
৪০. পদ্মা সেতুর প্রথম স্প্যান বসানো হয় কত তারিখে?
উত্তর: ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০১৭ সালে।
পদ্মা সেতু সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান সমূহ
৪১. পদ্মা সেতুর প্রতি পিলারের জন্য কতটি পাইলিং করা হয়েছে?
উত্তর: ৬ টি। তবে মাটি জটিলার কারণে ২২টি পিলারের পাইলিং হয়েছে ৭টি করে।
৪২. পদ্মা সেতুর সর্বশেষ স্প্যান বসে কোন কোন পিলারের উপর?
উত্তর: ১২ ও ১৩ নং পিলারের উপর।
৪৩. পদ্মা সেতুর প্রথম স্প্যান বসানো হয় কোন কোন পিলারের উপর?
উত্তর: ৩৭ ও ৩৮ নং পিলারের উপর।
৪৪. পদ্মা সেতুর সর্বশেষ ৪১তম স্প্যান বসে কত তারিখে?
উত্তর: ১০ ডিসেম্বর, ২০২০ সালে।
৪৫. পদ্মা সেতুতে ব্যবহৃত প্রতিটি স্প্যানের ওজন কত টন?
উত্তর: ৩,১৪০ (তিন হাজার একশত চল্লিশ) টন।
৪৬. পদ্মা সেতুর ভূমিকম্পের বিয়ারিংসংক্রান্ত “ফ্রিকশন পেন্ডুলাম বিয়ারিংয়ে” এর সক্ষমতা কত টন?
উত্তর: ১০ হাজার টন। (যা বিশ্বে ২য় সর্বোচ্চ)
৪৭. পদ্মা সেতুর ভূমিকম্প সহনীয় মাত্র কত রিখটার স্কেল পর্যন্ত?
উত্তর: ৯ রিখটার স্কেল পর্যন্ত।
৪৮. পদ্মা সেতুর সংযোগ সড়ক কত কিলোমিটার?
উত্তর: ১৪ কিলোমিটার। (জাজিরা ও মাওয়া)
৪৯. পদ্মা সেতু প্রকল্পে নদী শাসন হয়েছে দুই পাড়ে কত কিলোমিটার?
উত্তর: ১২ কিলোমিটার।
৫০. পদ্মা সেতুতে রেল সংযোগ লাইন থাকবে কতটি?
উত্তর: ১টি (মিটার ও ব্রডগেজ)।
৫১. পদ্মা সেতুর দুই প্রান্তে কোন কোন অঞ্চল?
উত্তর: মাওয়া (মুন্সিগঞ্জ) এবং অপর প্রান্তে জাজিরা (শরিয়তপুর)।
৫২. পদ্মা সেতুর ৪১ টি স্প্যান বসাতে সময় লাগে কতদিন?
উত্তর: ৩ বছর ২ মাস ১০ দিন।
৫৪. সেতুতে যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে কবে?
উত্তর: ২০২১ সালের ডিসেম্বরে।
55.পদ্মা সেতুর প্রকল্প ব্যয় কত?
উত্তরঃ ৩০ হাজার ৭৯৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা।
56. পদ্মা সেতুর অফিসিয়াল নাম কী?
উত্তরঃ পদ্মা বহুমুখী সেতু ( The Padma Multipurpose Bridge )।
57. পদ্মা সেতু নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানের নাম কী?
উত্তরঃ চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিঃ
57. কত তারিখে পদ্মা সেতু নির্মাণ কাজ শুরু হয়?
উত্তরঃ ৭ ডিসেম্বর ২০১৪ ইং
58. পদ্মা সেতুর দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ কত?
উত্তরঃ মোট দৈর্ঘ্য ৬.১৫ কিমি (২০,২০০ ফুট) এবং প্রস্থ ১৮.১০ মি (৫৯.৪ ফুট)
59. পদ্মা সেতুর স্থান কোথায়?
উত্তরঃ মুন্সিগঞ্জের মাওয়া এবং শরীয়তপুরের জাজিরা পয়েন্টে।
60. পদ্মা সেতুর মোট পিলার সংখ্যা কতটি?
উত্তরঃ ৪২ টি।
61.১ টি পিলার থেকে অন্য একটি পিলারের দূরত্ব কত? / প্রতিটি স্প্যানের দৈর্ঘ্য কত?
উত্তরঃ ১৫০ মিটার
62.বাংলাদেশের দীর্ঘতম সেতুর নাম কী?
উত্তরঃ পদ্মা সেতু.
65.পদ্মা সেতুর মোট স্প্যান সংখ্যা কতটি?
উত্তরঃ ৪১ টি।
66. কত তারিখে এবং কত নং পিলারে পদ্মা সেতুর প্রথম স্প্যান বসানো হয়?
উত্তরঃ ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর, শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তে ৩৭ ও ৩৮ নং পিলারের উপর পদ্মা সেতুর প্রথম স্প্যান বসানো হয়। ঐদিন পদ্মা সেতু প্রথম দৃশ্যমান হয়।
67. কত তারিখে এবং কত নং পিলারে পদ্মা সেতুর সর্বশেষ স্প্যান বসানো হয়?
উত্তরঃ ২০২০ সালের ১০ ডিসেম্বর, ১২ ও ১৩ নং পিলারের উপর পদ্মা সেতুর সর্বশেষ স্প্যান বসানো হয়। ঐদিন সম্পূর্ণ সেতুর কাঠামো প্রথম দৃশ্যমান হয়।
69. পদ্মা সেতু রক্ষণাবেক্ষেণের দায়িত্ব কার?
উত্তরঃ বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের ( The Bangladesh Bridge Authority )
70. পদ্মা সেতুর জন্য প্রয়োজনীয় এবং অধিগ্রহণকৃত মোট জমির পরিমাণ কত?
উত্তরঃ প্রায় ৯১৮ হেক্টর।
72. পদ্মা সেতু নিচ দিয়ে নৌ-যান চলাচলের জন্য কতটুকু ফাঁকা রাখা হয়েছে?
উত্তরঃ ১৮ মিটার(৬০ ফুট)
73. পদ্মা সেতুতে সড়ক পথ কত লেনের?
উত্তরঃ ৪ লেনের।
74. পদ্মা সেতুর সড়ক পথের নিচ দিয়ে কী আছে?
উত্তরঃ রেলপথ। যা দিয়ে মিটারগেজ ও ব্রডগেজে উভয়ে ট্রেনের যেকোন একটি চলতে পারবে।
75. পদ্মা সেতুতে মোট কতটি পাইল আছে?
উত্তরঃ ২৮৬ টি । এর মধ্যে ২৬২ টি স্টিল ও ২৪ টি কংক্রিটের। প্রতিটি পাইলের পরিধি ৩ মিটার। এগুলো ১১৪-১২০ মিটার মাটির নিচে আছে।
76… পদ্মা সেতুতে সড়কের জন্য কতটি ভায়াডাক্ট আছে?
উত্তরঃ সড়কের জন্য চারটি, প্রতি পাশে দুইটি করে। ৩৮ টি স্প্যান নিয়ে ৭২০-৮৭৫ মিটার পর্যন্ত বিস্তৃত। আর রেলপথের জন্য প্রতিপাশে একটি করে দুইটি ভায়াডাক্ট আছে।
You may also like:
- স্যাটেলাইট কি ? বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট সম্পর্কিত তথ্য
- মাল্টিমিডিয়া কি ? মাল্টিমিডিয়ার বৈশিষ্ট্য এবং উপাদান গুলো
- নাসা কি ? (What is NASA in Bengali)
- ন্যাটো (NATO) কি ? ন্যাটোর সদস্য দেশ কয়টি ও কি কি
- অ্যানিমেশন কি ?
পদ্মা সেতু সম্পর্কে আরও জানতে উইকিপিডিয়া লিংক।
পদ্মা সেতু সম্পর্কে এই আর্টিকেলটি আপনার ভালো লাগলে সোশ্যাল মিডিয়ায় অবশ্যই শেয়ার করবেন।
Thanks for the information.
Thank you.