বন্ধু এবং বন্ধুত্ব মানে কি – (About friendship in Bengali)

বন্ধুরা আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা জানবো, বন্ধুত্ব মানে কি, বন্ধু মানে কি, প্রকৃত বন্ধু কাকে বলে, ভালো বন্ধুর বৈশিষ্টগুলো কি কি?

বন্ধু এবং বন্ধুত্ব মানে কি
What is friendship in Bengali ?

বন্ধু এবং বন্ধুত্ব এই শব্দগুলোর সাথে আমরা গভীরভাবে পরিচিত। কারণ আমাদের প্রত্যেকের জীবনে কিছু বন্ধু অবশ্যই রয়েছে।

আর বন্ধুত্বের সম্পর্কের জন্যই আমরা আমাদের জীবনে চলার পথে সুখ এবং সাচ্ছন্দ্য অনুভব করে থাকি।

বন্ধুত্বের সম্পর্কের বিষয়ে কিছু মূল্যবান কথা রয়েছে। যেমন,

জীবনের অনেক সুখ দুঃখ রয়েছে যেগুলো বন্ধু ছাড়া অন্য কারোর কাছে প্রকাশ করা যায় না, কেননা বন্ধুর মতো কাছের কেউ হয় না।

মানুষের জীবনে একাধিকবার প্রেম ভালোবাসা আসতে পারে কিন্তু একজন প্রকৃত বন্ধুর বিকল্প কোন কিছুই হতে পারে না এবং যা কখনোই বদলে যায় না না।

একজন জ্ঞানি ব্যক্তি এই কথা বলেছেন যে, আমরা আমাদের ভাগ্যের কারণে আমাদের পরিবারের সদস্যদের পেয়ে থাকি, কারণ কারা আমাদের বাবা, মা, ভাই, বোন হবেন তা নিশ্চিত করার মতো শক্তি আমাদের কারোর থাকে না। কেননা সেটি সম্পূর্ণ রুপে একটি প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া।

কিন্তু আমরা আমাদের নিজেদের ইচ্ছামত বন্ধু বাছাই করে থাকি। আমাদের প্রিয় বন্ধু বা বান্ধবী কে হবেন তা নিশ্চিত করার সম্পূর্ণ ক্ষমতা আমাদের হাতে রয়েছে।

তাই আমাদের জীবনে বন্ধুত্বের সম্পর্কটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ক হয়ে দাঁড়ায়।

বন্ধুত্ব তৈরি হয় না বরং বন্ধুত্ব গড়ে উঠে আর বন্ধুত্ব গরে উঠতে সময় লাগে জন্যই বন্ধুত্বের সম্পর্কটা সারাজীবন স্থায়ী হয়ে থাকে।

বন্ধু মানে ভালোবাসা, সহযোগিতা, পাশাপাশি চলা এবং সারাটি জীবন একসাথে থাকা।

বন্ধু কাকে বলে বা বন্ধুত্ব কাকে বলে এ বিষয়ে প্রচুর কথা রয়েছে এবং বন্ধু এবং বন্ধুত্বের সংজ্ঞা প্রত্যেকেরই কাছে আলাদা হয়ে থাকে।

প্রকৃত বন্ধু হলো এমন একটি শক্তিশালী সম্পর্ক যা চিরকাল আপনার সাথে থেকে যাবে।

তো চলুন নিচে বন্ধু এবং বন্ধুত্বের বিষয়ে আরো ভালোভাবে জেনে নেওয়া যাক

বন্ধুত্ব মানে কি | প্রকৃত বন্ধু কাকে বলে

বন্ধুত্ব, স্থায়ী স্নেহ, সম্মান, ঘনিষ্ঠতা এবং দুই ব্যক্তির মধ্যে বিশ্বাসের একটি অবস্থা। বন্ধুত্ব একজন ব্যক্তির জীবনকাল জুড়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ক হিসেবে বিবেচিত।

একজন শিশু ছোটকাল থেকে আস্তে আস্তে বড় হয়ে থাকে।

এসময় চলার পথে বিভিন্ন সময়ে তার সাথে ভিন্ন ভিন্ন মানুষের সাথে পরিচয় ঘটতে থাকে।

তাদের মধ্যে কিছু ব্যক্তির সাথে তার ভালো সম্পর্ক গরে উঠতে থাকে এবং ধীরে ধীরে সম্পর্ক শক্তিশালী হয়ে ওঠে।

আর এই ব্যক্তিরাই তার বন্ধু হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকে।

আর আমাদের জীবনের কেবল স্কুল কলেজের বয়সেই নতুন নতুন বন্ধু গরে ওথে না, যেকোন বয়সেই যেকেউ আমাদের মনে ভালো জায়গা করে নিতে পারে এবং সে আমাদের বন্ধু হয়ে যেতে পারে।

যে প্রকৃত বন্ধু সে আপনাকে কখনো ছেড়ে যাবে না কেননা বিপদের বন্ধুই প্রকৃত বন্ধু।

আপনার জীবনের সেই মূহুর্তটিতেও আপনার প্রকৃত বন্ধুকে কাছে পেতে পারবেন যখন আপনার পাশে অন্য কেউ থাকবে না।

একজন প্রকৃত বন্ধু একটি সুন্দর বইয়ের মতো আপনার ব্যক্তিত্ব এবং জ্ঞানের উন্নতি সাধন করতে সাহায্য করে থাকে।

একজন ভালো বন্ধু হলো আপনার অভিভাবকের মতো যে আপনার সংকটের সময় সঠিক পরামর্শ দিয়ে থাকে।

বন্ধু মানে কি | ভালো বন্ধুর বৈশিষ্ট্য

যদিও কোন বয়সে শিশুরা প্রথমে বন্ধুত্ব গড়ে তুলতে শুরু করে সে বিষয়ে কোন সুস্পষ্ট জ্ঞান নেই, তবে এই ধরনের বন্ধুত্বের ভিত্তি বেশ তাড়াতাড়িই বেরিয়ে আসতে শুরু করে। বাচ্চারা অপরিচিত সহকর্মীদের সাথে পরিচিত হওয়ার আগে পরিচিত সহকর্মীদের সাথে তাদের কথোপকথনে নিয়মিত, অনুমানযোগ্য পদ্ধতিতে আচরণ করে। জীবনের প্রথম দুই বছরের মধ্যে, শিশুরা অন্যদের তুলনায় নির্দিষ্ট সহকর্মীদের বেশি পছন্দ করে থাকে।

শিশুরা যখন প্রি স্কুল বয়সে পৌঁছায়, তখন প্রকৃত বন্ধুত্বের অস্তিত্ব আরও স্পষ্ট হয়।

শিশুরা প্রথমে বন্ধুত্বের সংজ্ঞা দেয়, যেমন “আমরা একসাথে খেলি।” সঙ্গীতা সাধারণত বাচ্চাদের এবং প্রিস্কুলারদের মধ্যে বন্ধুত্বের প্রাথমিক কাজ হিসাবে দেখা হয়।

প্রাক বিদ্যালয়ের বন্ধুরা একে অপরের সাথে বেশি সামাজিক যোগাযোগ করে, একে অপরের সাথে বেশি কথা বলে, এবং তারা তাদের বন্ধুদের সাথে মিথস্ক্রিয়া করার চেয়ে একে অপরের সাথে তাদের কথোপকথনে বেশি সমতা এবং কম আধিপত্য প্রদর্শন করে।

প্রিস্কুল দ্বারা, শিশুরা তাদের বন্ধুত্বের মধ্যে আরো আবেগপূর্ণ এবং অনুভূতিমূলক কাজগুলি অন্তর্ভুক্ত করতে শুরু করে।

প্রাক -বিদ্যালয়ের বন্ধুরা একে অপরের প্রতি আরও ইতিবাচক প্রভাব প্রকাশ করে।

এমনকি ছোট বাচ্চারাও প্রায়শই দুঃখী বা একাকী হয়ে যায় যখন তাদের কোনও বন্ধু চলে যায়।

উপরন্তু, বন্ধুত্ব সবসময় ছোট বাচ্চাদের মধ্যে পারস্পরিক হয় না। যদিও বন্ধুত্বের সংজ্ঞা সাধারণত পারস্পরিকতা প্রয়োজন, একতরফা বন্ধুত্ব, যেখানে একটি জুটির মাত্র একটি সন্তান অন্যকে বন্ধু হিসাবে মনোনীত করে, শৈশবকালে এটি বেশ সাধারণ। প্রকৃতপক্ষে, মনোনীত প্রাক স্কুল বন্ধুত্বের প্রায় অর্ধেক একতরফা।

মধ্যবয়সে বন্ধুত্ব উন্নয়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক তৈরি করে, সামাজিক যোগাযোগের দক্ষতা ক্রমশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে।

স্কুল-বয়সের শিশুরা সহকর্মীদের সাথে আলাপচারিতায় প্রচুর সময় ব্যয় করে এবং এইভাবে শৈশবে তাদের অর্জিত বন্ধুত্বের দক্ষতা বাড়ানোর জন্য অনেক সুযোগ দেওয়া হয়। শিশুরা এমন ব্যক্তিদের সাথে বন্ধুত্ব গড়ে তোলে যারা বিভিন্ন মাত্রায় নিজেদের মতো।

বন্ধু এবং বন্ধুত্বের প্রকার – Types of friendship

বন্ধুত্ব সাধারণত ৪ ধরনের হয়ে থাকে। যেমন,

  • চেনা পরিচিত ব্যক্তি: এরা আমাদের পরিচিত ব্যক্তি যাদের আমরা আগে থেকেই চিনে থাকি। এদের সাথে কখনো দেখা হলে আমরা কথাবার্তা বলে থাকি। কিন্তু এদেরকে বন্ধু বলা যেতে পারে না। কিন্তু তবুও এদের সাথে আমাদের একটি সম্পর্ক থাকে।
  • বন্ধু: এদের সাথে আমাদের বন্ধুত্বের সম্পর্ক থেকে থাকে। এদের সাথে দেখা হলে আমরা অনেক সময় কথা বার্তা বলে থাকি। যদিও এরা আমাদের বন্ধু কিন্তু এদের সাথে তেমন গভীর বন্ধুত্বের সম্পর্ক থাকে না।
  • কাছের বন্ধু: সেই বন্ধুদেরই কাছের বন্ধু বলে অভিহিত করা হয় যাদের সাথে আমাদের গভীর বন্ধুত্বের সম্পর্ক থাকে। তাদের সাথে প্রায় প্রতিনিয়ত দেখা হয় এবং কথাবার্তা হয়। আমারা কাছের বন্ধুর সাথে অধিক সময় কাটিয়ে দিয়ে থাকি।
  • ভালো বন্ধু: একজন ভালো বন্ধু আপনার দুঃখে কষ্টে সবসময়ই আপনার সাথে থাকার চেষ্টা করে। ভালো বন্ধুর নিয়ে অনেকগুলো সুন্দর উক্তি রয়েছে যেমন, বন্ধু তো অনেকটা মুমূর্ষু অক্সিজেনের মতো যা মুমূর্ষ অবস্থায় আপনাকে স্বস্তি দিতে পারে।

একজন ভালো বন্ধু আপনার ক্ষুদ্র আকন্দকে বৃহৎ আনন্দে রূপান্তরিত করতে পারতে পারে এবং একজন ভালো বন্ধু আপনার বৃহৎ দুঃখকে ক্ষুদ্র দুঃখে পরিণত করতে পারে।

Conclusion

বন্ধুরা আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনারা বন্ধুত্ব মানে কি, বন্ধু মানে কি, প্রকৃত বন্ধু কাকে বলে, (What is friendship in Bengali) এসব বিষয়ে জানতে পেরেছেন।

আশা করি বন্ধু এবং বন্ধুত্ব নিয়ে আমার লিখা এই আর্টিকেলটি আপনাদের ভালো লেগেছে।

আর্টিকেলটি আপনার বন্ধুদের সাথে সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করতে পারেন।

আর কোন প্রশ্ন থাকলে অবশ্যই নিচে কমেন্ট করে জানিয়ে দিবেন। ধন্যবাদ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *