ভিনেগার কাকে বলে ? ভিনেগারের কাজ, ব্যবহার এবং সংকেত

আজকের আর্টিকেল এর মাধ্যমে আমরা জানবো, ভিনেগার কি বা ভিনেগার কাকে বলে? ভিনেগারের কাজ কি? ভিনেগারের ব্যবহার, ভিনেগার কত প্রকার ও কি কি? এবং ভিনেগারের সংকেত কি?

ভিনেগার কাকে বলে
What is Vinegar in Bangla?

এসব বিষয়ে এই আর্টিকেলের আমি আলোচনা করবো।

আমরা প্রায়ই ভিনেগার নামটি শুনে থাকি বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

সাধারণভাবে ভিনেগারকে রান্নার কাজে ব্যবহার করা হয়। ভিনেগার আমাদের শরীরের জন্য খুবই উপকারী। এর অনেক উপকারিতা রয়েছে।

এসব বিষয়ে আমি নিচে আলোচনা করেছি। সেই সাথে ভিনেগার কি কি দিয়ে তৈরি করা হয় সে বিষয়েও এই আর্টিকেলে আলোচনা করা হবে। এখন চলুন জেনে নেওয়া যাক ভিনেগার কি?

ভিনেগার কি ? (What Is Vinegar In Bengali)

ভিনেগার নামটি আমাদের প্রায় সকলের কাছে পরিচিত। ভিনেগার মূলত এসিটিক এসিড এবং জল সমন্বিত একটি উপাদান। বিজ্ঞানীদের মতে ভিনেগার অ্যাসিটিক এসিডের ৬-১০% পরিমাণ পানির মিশ্রণ দিয়ে তৈরি।

চিনি বা ইথানলকে গাজন প্রক্রিয়ায় এসিটিক এসিড এ রুপান্তরিত করা হয়।

ভিনেগার সাধারণত বিভিন্ন ধরনের ফলের রস দিয়ে তৈরি করা হয়ে থাকে। এটি আমাদের শরীর সুস্থ রাখার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং উপকারী একটি উপাদান।

এটি কেবল রান্নার কাজেই নয় আরও বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভিনেগারের ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

সহজভাবে ভিনেগারের সংজ্ঞা,

ভিনেগার কাকে বলে?

ইথানয়িক এসিডের 4% থেকে 10% জলীয় দ্রবণকে ভিনেগার বলা হয়।

ভিনেগার সস বা আচার সংরক্ষণে ব্যবহৃত হয়।

তাহলে আশা করি ভিনেগার কি বা ভিনেগার কাকে বলে এ বিষয়ে জানতে পেরেছেন। এখন চলুন জেনে নিই ভিনেগার কি কি কাজে ব্যবহার করা হয়?

ভিনেগার এর ব্যবহার

আমরা জানি ভিনেগার সাধারণত রান্নাঘরে রান্নার কাজে ব্যবহার করা হয় বিভিন্ন সুস্বাদু আচার চাটনি এবং স্যালাড তৈরিতে ভিনেগার ব্যবহার করা হয়। এটি মূলত বিদেশি রান্নার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

এছাড়া চিকিৎসা ক্ষেত্রে এবং ত্বক পরিচর্যার ক্ষেত্রে এর বহুবিধ ব্যবহার রয়েছে। আমাদের ত্বক পরিচর্যার ক্ষেত্রে ভিনেগারের ব্যবহার রয়েছে।

ভিনেগার ব্যবহার করার ফলে আমাদের ত্বক সুন্দর হয় ওঠে এবং ত্বকের পরিচর্যা করা হয়।

খাদ্য সংরক্ষণের ক্ষেত্রে ভিনেগার খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

এছাড়া ভিনেগারের কাজ কি? ভিনেগার কত প্রকার ও কি কি? ভিনেগার ব্যবহারের উপকারিতা এবং এর সংকেত সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হয়েছে।

ভিনেগারের কাজ কি?

ভিনেগারের অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ রয়েছে। এটি খাবারকে সুস্বাদু করতে এবং ত্বক পরিচর্যার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

সেইসাথে রোগ নিরাময়ের ক্ষেত্রে অধিক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বিভিন্ন জটিল রোগ নিরাময়ে তার ব্যবহার করা হয়ে থাকে।

খাদ্য সংরক্ষণে ভিনেগারের গুরুত্ব: সিরকা বা ভিনেগার হচ্ছে ইথানয়িক এসিডের 4% -10% জলীয় দ্রবণ। খাদ্যদ্রব্য সংরক্ষণে সিরকা বা ভিনেগার ব্যবহার করা হয়।

কারণ ভিনেগারে ইথানয়িক এসিড জলীয় দ্রবণে আংশিক বিয়োজিত হয়ে হাইড্রোজেন আয়ন উৎপন্ন করে যা নিম্নরূপ:

CH3-COOH + H2O – CH3COO- + H+

খাদ্যদ্রব্য পচে যাওয়ার জন্য দায়ী ব্যাকটেরিয়া।

আর ভিনেগারের ইথানয়িক এসিডের H ব্যাকটেরিয়ার প্রোটিন ও ফ্যাটকে আর্দ্র বিশ্লেষিত করে। ফলে ব্যাকটেরিয়া মরে যায়।

এজন্য মাছ, মাংস ভালো রাখার জন্য সিরকা বা ভিনেগার ব্যবহৃত হয়।

ভিনেগারের বৈশিষ্ট্য

  1. ভিনেগারের কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই।
  2. এটি মৃদু এসিড হওয়ায় খাবারের সাথে গ্রহণ করলে এসিডটি বাড়ার কোনো সম্ভাবনা থাকে না। বরং খাবার ও দেহের pH এর সমতা বজায় রাখে।
  3. এটি অম্লীয় দ্রবণ বিধায় এর প্রভাবে সংরক্ষিত খাদ্য দ্রব্যের দ্রবণের pH মান কমে যায়। অণুজীব বিশেষ করে ব্যাকটেরিয়া জন্মানো ও বংশবিস্তারের অনুকূল পরিবেশ পায় না। ইথানোয়িক এসিডের 6 % জলীয় দ্রবণের pH মান প্রায় 2.35 যা ব্যাকটেরিয়া ধ্বংসের জন্য যথেষ্ট।

ভিনেগারের গুরুত্ব

ভিনেগার কৃষিপণ্য সংরক্ষণে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। যেমন:

পিকলিং: অণুজীব প্রতিরোধী তরলে পচনশীল খাদ্যদ্রব্য সংরক্ষণ পদ্ধতির নাম পিকলিং। রাসায়নিক পিকলিং প্রক্রিয়ায় ভিনেগার পৃথিবীব্যাপী সর্বাধিক ব্যবহৃত খাদ্য সংরক্ষক।

শীতের সবজি, পেঁয়াজ, রসুন, কাঁচামরিচ, মিশ্র সবজি প্রভৃতি পচনশীল কৃষিপণ্য ভিনেগারে ডুবিয়ে সংরক্ষণ করা হয়। কখনও কখনও খাদ্য দ্রব্যকে ভিনেগারসহ তাপ দিয়ে বা ফুটিয়ে রাখা হয়।

এতে ভিনেগারের অম্লীয় মাধ্যম ছাড়াও উত্তাপে অণুজীব ধ্বংস হয়ে যায় বলে খাদ্য সংরক্ষণে বেশি কার্যকর হয়। মাসের পর মাস, এমনকি বছরব্যাপী খাদ্যদ্রব্য সংরক্ষিত থাকে

আচার তৈরিতে: বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলংকা, নেপাল ও ভুটান ইত্যাদি দেশসমূহে আম, জলপাই, কুল, লেবু, করমচা, মরিচ ও বিভিন্ন সবজির আচার তৈরিতে ভিনেগারের ব্যবহৃত হয়। আচার তৈরির মাধ্যমে কৃষিপণ্য সংরক্ষণ করা যায়।

ভিনেগারের উপকারিতা

ভিনেগার শুধু খাদ্য নিরাপত্তায় নয় আমাদের জৈবিক কাজকেও সহজতর করে। নিচে তা বিশ্লেষণ করা হলো:

ভিনেগারের জলীয় দ্রবণ অম্লীয় হওয়ায় এর সাহায্যে সংরক্ষিত খাদ্য সামগ্রীর দ্রবণে pH এর মান কমিয়ে দেয়।

ফলে অণুজীব বিশেষ করে ব্যাকটেরিয়া জন্মানোর ও বংশ বিস্তারের অনুকূল পরিবেশ পায় না। ফলে খাদ্যদ্রব্যের মান দীর্ঘদিন ঠিক থাকে।

এছাড়াও খাদ্যের সাথে সরাসরি পরিমিত মাত্রায় ভিনেগার গ্রহণ করলে শারীরিক বহুমাত্রিক উপকার সাধিত হয়।

এটি খাবারে রুচি আনে, রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে দেয়, হজমশক্তি বাড়ায়, শরীরে সৃষ্ট তরল অপদ্রব্য নিঃসরণে ভূমিকা রাখে, রক্তের অপ্রয়োজনীয় চর্বি বিদূরিত করে শরীরকে স্লিম রাখতে সাহায্য করে।

রোগ নিরাময়ে ভিনেগারের উপকারিতা

সাম্প্রতিক পরীক্ষায় প্রমাণিত হয়েছে যে ভিনেগার রক্তচাপ ও রক্তের কোলেস্টেরলের পরিমাণ হ্রাস করে। ভিনেগারসমৃদ্ধ খাবার ক্যান্সার ও টিউমার প্রতিরোধে ভালো কাজ করে।

ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, ক্যান্সার, কোলেস্টেরন, কিডনির সমস্যা, হাইপার টেনশন এসকল জটিল রোগ নিরাময়ে ভিনেগার ব্যবহার করা হয়।

সুতরাং আমাদের শরীরের জন্য ভিনেগারের অনেক উপকারিতা রয়েছে।

ভিনেগার কত প্রকার ও কি কি?

ভিনেগার বিভিন্ন ধরনের ফলের রসের সমন্বয়ে তৈরি করা হয়ে থাকে। যে ফলের রস দিয়ে এটি তৈরি করা হয় সেই ফলের নাম অনুযায়ী এটির নামকরণ করা হয়ে থাকে।

তবে সাধারণভাবে ভিনেগার দুই ধরনের হয়ে থাকে।

  • সাদা ভিনেগার এবং
  • অ্যাপেল সিডার ভিনেগার

ভিনেগারের সংকেত‌ কি?

ভিনেগারকে এসিটিক এসিড বলা হয়। ইথানয়িক এসিড বা এসিটিক এসিডের 4-10℅ জলীয় দ্রবণকে ভিনেগার বলা হয়।

ভিনেগারের সংকেত হলো CH3-COOH

সর্বশেষ

“ভিনেগার কি বা ভিনেগার কাকে বলে?” এ বিষয়ে আশা করি ভালো ভাবে বুঝতে পেরেছেন।

আমি এই আর্টিকেলটি ইন্টারনেট থেকে তথ্য সংগ্রহ করে লিখেছি। এর সোর্স আমি নিচে দিয়ে দিচ্ছি।

অবশ্যই পড়ুন –

2 Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *