মোবাইল ফোন রচনা – (Mobile Phone Essay in Bengali)
মোবাইল ফোন রচনা – (Mobile Phone Essay In Bengali), নিয়ে আমাদের আজকের এই আর্টিকেলটি লিখা হয়েছে। আপনি যদি মোবাইল ফোন সম্পর্কে একটি সুন্দর রচনা খুঁজছেন, তাহলে নিচে একটি সুন্দর মোবাইল ফোন রচনা উল্লেখ হয়েছে। আশা করি এই মোবাইল ফোন অনুচ্ছেদ রচনা আপনার পছন্দ হয়ে থাকবে।

বর্তমানে মোবাইল ফোন ছাড়া মানুষের এক মূহুর্ত সঠিকমত কাটানোর কল্পনা করা যায় না। এই ছোট আকারের একটি ডিভাইস মানুষের দৈনন্দিন জীবন ঠিকমত পার করতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে।
মোবাইলে বা স্মার্টফোনের মাধ্যমে এক জনের সাথে অন্য জনের কথা বলার পাশাপাশি ইন্টারনেট ব্যবহার করা যায়। ফলে মানুষ ইন্টারনেটের মত এক বিশাল বিশ্বকোষ থেকে প্রতিনিয়ত তথ্য নিতে পারে। সেই সাথে আত্বীয় স্বজন কিংবা প্রিয়জনদের সাথে সোশ্যাল মিডিয়ায় সময় কাটাতে পারে।
মোবাইল ফোন মানুষকে বিনোদন দেওয়ার কাজেও ব্যবহার করা হয়ে থাকে। তাই ডিজিটাল প্রযুক্তির এই যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে মোবাইল ফোন খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখে।
নিচে দুইটি মোবাইল ফোন রচনা দেখেনিন। মোবাইল ফোন অনুচ্ছেদ রচনা।
মোবাইল ফোন রচনা – (Mobile Phone Essay In Bengali)
ভূমিকা: বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মানুষের জীবনকে প্রতিনিয়ত সহজ থেকে সহজতর করে তুলছে। বর্তমান যুগে বিজ্ঞানের অন্যতম আবিষ্কার হলাে মােবাইল ফোন বা মুঠোফোন। মােবাইল ফোন টেলিযােগাযােগ ব্যবস্থাপনায় বিপ্লব এনেছে, আর উন্মােচন করেছে যােগাযােগ মাধ্যমের নবদিগন্ত।
মােবাইল ফোন কী: মােবাইল ফোন হলাে ছােট আকারের একটি ইলেকট্রনিক ডিভাইস। এর মধ্যে শব্দ বা তথ্য গ্রহণ এবং প্রেরণ করার জন্য ইনপুট এবং আউটপুট ইউনিট থাকে। আর থাকে একটি ডিসপ্লে ইউনিট বা পর্দা, যার মাধ্যমে ব্যবহারকারী নিজের ফোনে অপর প্রান্ত থেকে আসা কোনাে ফোন কলের নম্বরসহ কানেকশন বা সংযােগের প্রকৃতি দেখতে পায়। সেই সাথে এতে সময় ও তারিখেরও নির্ভুল প্রদর্শন হয়ে থাকে। অতি সহজে হাতের মুঠোয় পরিবহনযােগ্য বলে খুব সহজেই মানুষের মনােযােগ আকর্ষণে সক্ষম হয়েছে মুঠোফোন।
মােবাইল ফোন সংযােগ: একটি মােবাইল ফোনের সংযােগ পেতে হলে অনিবার্য কিছু উপাদানকে বৈজ্ঞানিক বিধিসম্মতভাবে সমন্বিত করতে হয়। সবচেয়ে আগে প্রয়ােজন একটি মােবাইল হ্যান্ডসেট যার মাধ্যমে আবশ্যক উপাদানগুলােকে যথাযথভাবে ধরে রাখা যায়। সিমকার্ড, পিনকোড ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য ও ছবি এ তিনটি আবশ্যক উপাদানের কোনাে একটি বাদ থাকলে মােবাইল সংযােগ সম্ভব নয়। সিমকার্ডের সঙ্গে যুক্ত থাকে একটি নেটওয়ার্ক যা দ্বারা ফোনটি নিয়ন্ত্রিত হয়। স্থানে স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা নেটওয়ার্ক টাওয়ারগুলাে সিমকার্ডের সাথে শতভাগ যােগাযােগ রক্ষা করে চলে।
মােবাইল ফোনের বিবর্তন: স্বয়ংক্রিয় ও তারবিহীন যােগাযােগ ব্যবস্থা হিসেবে মােবাইল ফোনের যাত্রা শুরু হয়েছিল বিশ শতকের চল্লিশের দশকে। যদিও এ প্রযুক্তির আবিষ্কার ও কার্যক্ষমতা নিয়ে গবেষণা ও মূল্যায়ন হয়ে আসছিল সুদূর অতীত থেকেই। বিজ্ঞানীরা মােবাইল ফোনে ভিডিও করার পদ্ধতি আবিষ্কার করলে প্রযুক্তিগত দিকে এটি আরও এক ধাপ এগিয়ে যায়। বিবর্তনের ধারায় এখন অনেক অসম্ভবকে সম্ভব করেছে মােবাইল ফোন।
ড. মার্টিন কুপারকে আধুনিক সেলফোনের জনক বলা হয়। তার হাত ধরেই বিচিত্র কাজের এবং দ্রুত যােগাযােগের এ মাধ্যমটি বিকাশের পথ খুঁজে পায়। বর্তমানে সারা বিশ্বের খ্যাতনামা বড় বড় প্রতিষ্ঠান নানা নকশার রকমারি কার্য সম্পাদনে সক্ষম মােবাইল ফোন সেট বাজারজাত করছে। এদের মধ্যে নকিয়া, স্যামসাং, হুয়াওয়ে, সনি অন্যতম।
মােবাইল ফোনের গুরুত্ব: বর্তমান সময়ে একে অন্যের সাথে দুত যােগাযােগের সহজ মাধ্যম মােবাইল ফোন। সাম্প্রতিক সময়ে মােবাইল ফোনে ইন্টারনেট প্রযুক্তি ব্যবহার করে তথ্য আদান প্রদানসহ ভিডিও চিত্র বিনিময় সম্ভব হয়েছে। মােবাইল ফোনের মাধ্যমে এখন চলতি পথে গল্পের ফাকেও অতি সহজে জেনে নেয়া সম্ভব হচ্ছে সর্বশেষ সংবাদ। দূরের কাউকে মাত্র কয়েক সেকেন্ডে চিঠি বা Message পাঠানাে সম্ভব হচ্ছে মুঠোফোনের কল্যাণেই। ঘড়ি, ক্যালকুলেটর, গেমসসহ নানা কাজে এখন মােবাইলের ব্যবহারই জনপ্রিয়। তাই দৈনন্দিন জীবনে মােবাইল ফোনের গুরুত্ব অপরিসীম। মিনিটের মধ্যেই পাবলিক পরীক্ষার মতাে বড় বড় পরীক্ষার ফলাফল পরিক্ষার্থী ঘরে বসে পাচ্ছে শুধু মােবাইলের জাদুর কাঠির সুবাদেই।
কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা, চাকরির পরীক্ষার ফরম পূরণ ইত্যাদি কাজও করা যাচ্ছে মােবাইল ফোন ব্যবহার করে। তাই মােবাইল ফোনের ব্যবহারিক গুরুত্ব যে কোনাে মানুষের কাছেই সর্বাধিক।
বাংলাদেশে মােবাইল ফোন: বাংলাদেশ সর্বপ্রথম মােবাইলের জগতে প্রবেশ করে সিটিসেল কোম্পানির মাধ্যমে। ১৯৯৩ সালে এ সুবর্ণ সুযােগটি এদেশের মানুষ গ্রহণের সুযােগ পায়। ১৯৯৬ সালে সরকার গ্রামীণ ফোন, একটেল এবং সেবা এ তিনটি কোম্পানিকে তাদের কার্যক্রম পরিচালনার অনুমােদন দিলে মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষের আকাঙ্ক্ষা পূরণ হয়। কোম্পানিগুলাে প্রতিযােগিতার মাধ্যমে সাধ্যমতাে প্রচেষ্টা চালিয়ে তাদের নিজ নিজ গ্রাহকসংখ্যা বাড়াতে মনােযােগী হয়। ফলে সাধারণ মানুষের জন্য মােবাইল হয়ে ওঠে সহজলভ্য। এখন মােবাইল ফোন ব্যবহার কোনাে অসাধারণ ঘটনা নয় , এ যেন নিয়মিত আহার নিদ্রার মতো সাধারণ ঘটনা।
মােবাইল ব্যবহারের নেতিবাচক দিক: মােবাইল ফোনের হাজারাে ইতিবাচক দিক থাকা সত্ত্বেও এর কিছু নেতিবাচক দিকও রয়েছে। মােবাইল ফোন আজকাল সহজলভ্য বলে এবং দ্রুত যােগাযােগে সক্ষম বলে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডও অতি সহজে সংগঠিত হতে পারে। মােবাইল ফোনের কল চার্জ কম বলে অপ্রয়ােজনে দীর্ঘক্ষণ কথা বলে অপচয়ও করে কেউ কেউ। ছাত্রজীবনে এর ব্যাপক ব্যবহার থেকে দূরে থাকাই সমীচীন।
উপসংহার: তথ্য প্রযুক্তির প্রবল উৎকর্ষের যুগে মােবাইল এখন সুলভ সামগ্রী। যােগাযােগ ব্যবস্থার অন্যতম মাধ্যম হিসেবে এর প্রয়ােজনীয়তাও সমাজে সর্বাধিক। তাই বিজ্ঞানের এ অকৃপণ দানকে মানুষও গ্রহণ করেছে অকৃপণভাবে।
মোবাইল ফোন অনুচ্ছেদ রচনা
মোবাইল ফোন এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় সহজে বহন করা যায় এমন ফোনকে বলে মোবাইল ফোন মোবাইল ফোন আবিষ্কারের আগে দূরবর্তী কারো সঙ্গে কথা বলার জন্য ঘরের নির্দিষ্ট স্থানে টেলিফোন নামক যন্ত্র রাখতে হতো। এর সংক্ষিপ্ত নাম ফোন।
বিভিন্ন বাড়ি বা অফিসে তারের মাধ্যমে ফোনগুলো যুক্ত থাকত। অন্যদিকে মোবাইল ফোন তারবিহীন প্রযুক্তি হওয়ায় এটি যেখানে খুশি সেখানে বহন করা যায়। মোবাইল ফোনকে কখনো সেলুলার ফোন হ্যান্ড ফোন বা মুঠোফোন নামে অভিহিত করা হয়।
মোবাইল ফোনে আজকাল কথা বলার পাশাপাশি আধুনিক কম্পিউটার প্রযুক্তির যাবতীয় সুবিধা ভোগ করা যায়। এই সুবিধা আছে যেসব মোবাইল ফোনে সেগুলোকে বলে স্মার্ট ফোন। এই স্মার্টফোনে কথা বলা যায়, ক্ষুদে বার্তা আদান প্রদান করা যায়, ইমেইল পাঠানো যায়, বিভিন্ন সার্চ ইঞ্জিনের মাধ্যমে পৃথিবীর যাবতীয় তথ্যের সঙ্গে পরিচিত হওয়া যায় গান শোনা যায়, নাটক দেখা যায, রেডিও শোনা যায়, টিভি দেখা যায়।
অপরাধী শনাক্ত করার কাজেও আজকাল মোবাইল ফোন গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। বাংলাদেশে মোবাইল ফোন প্রথম চালু হয় ১৯৯৩ সালে। প্রায় ত্রিশ বছরের মধ্যে বাংলাদেশে মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা দশ কোটি ছাড়িয়ে গেছে।
You may also like:
- বই পড়ার উপকারিতা, গুরুত্ব এবং প্রয়োজনীয়তা গুলো
- ঘরে বসে টাকা আয় করার জন্য সেরা অনলাইন ইনকাম পদ্ধতি গুলো কি কি
- সহজে ইংরেজি শেখার উপায়
মোবাইল ফোন রচনা
সংকেত: ভূমিকা , মোবাইল ফোন কী , মোবাইল ফোনের বিবর্তন ধারা , মোবাইল ফোন তৈরি কোম্পানিগুলো মোবাইল ফোন ব্যবহারের সুবিধাগুলো , মোবাইল ফোন ব্যবহারে অসুবিধাগুলো , মোবাইল ফোনের কার্যপ্রণালি , বাংলাদেশ ও মোবাইল ফোন , সিটিসেল কোম্পানি , গ্রামীণ কোম্পানি , বাংলালিংক কোম্পানি , রবি ( একটেল ) কোম্পানি , টেলিটক কোম্পানি , ওয়ারিদ কোম্পানি , মোবাইল ফোনের গুরুত্ব , উপসংহার।
রচনাঃ মোবাইল ফোন
ভূমিকা:
বিবর্তনের সোপান বেয়ে বর্বর পৃথিবীর বাগানে একসময় ফুটেছিল সভ্যতার নতুন ফুল । তা – ও আবার বহু বছর আগের কথা । শিল্পবিপ্লবের হাত ধরে সভ্যতার প্রথম সময়ের মানুষেরা সৃষ্টির যে উন্মাদনায় মেতে ওঠে , তারই সুফল ভোগ করছি আমরা সভ্যতার যৌবনকালের মানুষেরা ।
আইনস্টাইন , আর্কিমিডিস কিংবা নিউটন , যার কথাই বলি না কেন , এরা সবাই সভ্যতাকে দিয়েছেন গতি । তবে শিল্পবিপ্লবের পর থেকে উনিশ শতকের মধ্যভাগ পর্যন্তই ছিল বিজ্ঞানের জয়জয়কার । এই ধারা এখন শুধু উৎকর্ষ লাভ করছে । তাই বিজ্ঞানের কল্যাণে শোভিত সভ্যতা বর্তমান শতকের সূচনা পাড়ে বসে নির্দ্বিধায় মাথা নত করে সম্মান জানাচ্ছে বিজ্ঞানের বৈচিত্র্যকে ।
বিজ্ঞানের এই মহাবিজয় রথের একটি গুরুত্বপূর্ণ সহযোগী হিসেবে যে যন্ত্রটি কাজ করে যাচ্ছে তা হলো মোবাইল ফোন । মোবাইল ফোন বর্তমান টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থায় এক নবদিগন্তের সূচনা করেছে ।
মোবাইল ফোন কী :
মোবাইল ফোন একটি ছোট আকারের ইলেকট্রনিক ডিভাইস । এর মধ্যে একটি ইনপুট ও একটি আউটপুট ইউনিট আছে । তথ্য প্রেরণ এবং গ্রহণের কাজে এগুলো ব্যবহৃত হয় । এ ছাড়া মোবাইল ফোনে একটি ডিসপ্লে ইউনিট থাকে , যার মাধ্যমে যেকোনো মোবাইলে অপর প্রান্ত থেকে কল এলে ফোন কলের নাম্বার দেখা যায় এবং মোবাইলে যে কল আসছে তা জানা যায় । বর্তমানে বিভিন্ন ধরনের মোবাইল ফোন পাওয়া যায় । কিছু কিছু মোবাইলের সাথে ক্যামেরা থাকে , যা দ্বারা ছবি তোলা যায় । আবার অনেক মোবাইলের মাধ্যমে গান ও সংবাদ শোনা যায় ।
মোবাইল ফোনের বিবর্তনের ধারা :
পরিবর্তন ও পরিবর্ধনের মধ্য দিয়ে মোবাইল ফোন অনেক পথ অতিক্রম করে আজ বর্তমান অবস্থায় এসেছে । মোবাইল ফোনের যাত্রা শুরু ১৯৪০ সাল থেকে যদিও এর আগে থেকে বিজ্ঞানীরা এটা নিয়ে গবেষণা চালিয়ে আসছিলেন । এরপর মোবাইলে নতুন নতুন প্রোগ্রাম সংযোজনের মাধ্যমে আরও আধুনিক করা হয়েছে ।
আর এরই ফলে ২০০৫ সালে মোবাইল ফোনে ভিডিও সংযোজনের মধ্য দিয়ে মোবাইল জগতে এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসে । ড . মার্টিন কুপারকে মোবাইল ফোনের জনক বলা হয় । তিনি ১৯৭৩ সালের ১৭ অক্টোবর মটোরোলা কোম্পানির পক্ষ থেকে রেডিও টেলিফোন সিস্টেম নামক একটি প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেন , যা মোবাইল ফোন প্রযুক্তির উন্নত সংস্করণ । মূলত বেতার যন্ত্র আবিষ্কারের মধ্য দিয়ে বিজ্ঞানীরা মোবাইল ফোন আবিষ্কারে অনুপ্রাণিত হন ।
১৮৯৭ সালে মার্কনি রেডিও আবিষ্কার করেন । এরপর বিজ্ঞানী মোর্স ওয়ারলেস আবিষ্কারের জন্য গবেষণা শুরু করেন এবং বিজ্ঞানী এডিসন ও বিজ্ঞানী হাগস ওয়ারলেস প্রযুক্তি সংস্কারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন । আর এই বিবর্তনধারার মধ্য দিয়ে মানুষের হাতে চলে আসে আধুনিক বিজ্ঞানের এক বিস্ময়কর আবিষ্কার মোবাইল ফোন , যা মুঠোফোন নামেও পরিচিত ।
মোবাইল ফোন তৈরির কোম্পানিগুলো :
বর্তমান বিশ্বে বিভিন্ন কোম্পানির তৈরি মোবাইল ফোন বাজারে পাওয়া যায় । এই কোম্পানিগুলোর মধ্যে স্যামসাং , অস্পো , শাওমি , সিম্ফনি , হুয়াই , মটোরোলা , নকিয়া , ভিভো প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য । তা ছাড়া বর্তমানে বাজারে বিভিন্ন চায়না মোবাইল ফোন পাওয়া যায় ।
এ কোম্পানিগুলোর বিভিন্ন ধরনের এবং বিভিন্ন দামের ফোন বাজারে পাওয়া যায় । কোনো কোনো মোবাইল ফোনে ক্যামেরা থাকে । আবার কোনো কোনো মোবাইল ফোনে ক্যামেরাসহ মেমোরি কার্ডের ব্যবস্থা থাকে , যাতে অডিও , ভিডিও গান , ছবি সংরক্ষণ করে রাখা যায় এবং ইচ্ছেমতো তা ব্যবহার করা যায় ।
তবে এই ফোনগুলোর দাম একটু বেশি । কিন্তু বাজারে সব সুবিধাসহ চায়না মোবাইলগুলোর দাম অনেক কম এবং তা সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে । ফলে বর্তমানে সাধারণ মানুষ বেশির ভাগই চায়না মোবাইল ব্যবহার করে থাকে । তবে অনেক শৌখিন মানুষ আছেন , যারা উল্লেখযোগ্য কোম্পানিগুলোর দামি মোবাইল ব্যবহার করেন ।
মোবাইল ফোন ব্যবহারের সুবিধা :
বিভিন্ন কাজে মোবাইল ফোন ব্যবহার করা হয়ে থাকে । যেমন পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা , ব্যবসায় – বাণিজ্যের সুবিধার্থে অথবা জরুরি কোনো বিষয়ে কাউকে খবর দেওয়া প্রভৃতি ।
মোবাইল ফোন ব্যবহারের মাধ্যমে দূরে থেকেও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায় । এমনকি কেউ যদিদেওয়া প্রভৃতি । মোবাইল ফোন ব্যবহারের মাধ্যমে দূরে থেকেও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায় । এমনকি কেউ যদি ।
দেশের বাইরে অর্থাৎ বিদেশে থাকে , তাহলে ঐ বিদেশে বসেও তার পরিবারের সাথে যোগাযোগ করতে পারে । মোবাইল ফোনের মাধ্যমে মানুষ ব্যবসা – বাণিজ্য করতে পারে । এর মাধ্যমে যেকোনো খবরাখবর যেকোনো মুহূর্তে যে কাউকে জানানো যায় ।
মোবাইল ফোন বহন করাও সুবিধাজনক । এটি ব্যবহারকারী তার ফোন সব ঘোরাফেরা করতে পারে । তাই দিন দিন মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়ছে । আর মানুষের চাহিদার ভিত্তিতে মোবাইল খে আধুনিক থেকে আরও আধুনিকতর হচ্ছে ।
মোবাইল ফোন ব্যবহারে অসুবিধাগুলো :
আলোর পাশে যেমন অন্ধকার বা থাকে , তেমনই মোবাইল ফোন ব্যবহারের সুবিধাগুলোর পাশে রয়েছে অসুবিধা অর্থাৎ ক্ষতিকর দিক । অনেক সময় দেখা যায় , মানুষ গাড়ি চালানোর সময় মোবাইল ফোনে কথা বলে । ফলে গাড়ি চালানোর প্রতি তার মনোযোগের ঘাটতি ঘটে , ফলে অনেক দুর্ঘটনাও ঘটে থাকে । এতে অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয় , এমনকি প্রাণহানিও ঘটতে পারে ।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশ যেমন ইসরাইল , জাপান , পর্তুগাল , সিঙ্গাপুর গাড়ি চালানোর সময় মোবাইল ফোন ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে । মোবাইল ফোন মানুষের শরীরের অনেক ক্ষতি করে । মোবাইল থেকে একধরনের ইলেকট্রোম্যাগনেটিক রেডিয়েশন বের হয় , যা মানুষের ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকিকে বাড়িয়ে তোলে । এটি ব্যবহারকারীর অনেক সময় কানের সমস্যা দেখা দিতে পারে । মোবাইল মানুষের উপকারের জন্য আবিষ্কৃত হলেও দেশে কিছু অসৎ মানুষ আছে যারা এটাকে বিভিন্ন অপকর্মে ব্যবহার করে থাকে ।
মোবাইল ফোনের কার্যপ্রণালি : (মোবাইল ফোন রচনা)
আধুনিক বিশ্বের একটি অন্যতম বিস্ময়কর আবিষ্কার মোবাইল ফোন । অধিকাংশ মোবাইল ফোনের ১৬ টি বাটন থাকে । তবে কিছু কিছু মোবাইলের ১৬ টির বেশি বাটন থাকে । মোবাইল শুধু কথা বলার কাজে ব্যবহার করা হয় না , এটা আরো অনেক কাজে ব্যবহৃত হয়ে থাকে ।
সব মোবাইলে অনেকগুলো প্রোগ্রাম থাকে যেমন Messages , Contacts , Clock , Games প্রভৃতি । এসব প্রোগ্রামের মাধ্যমে মানুষ বিভিন্ন কাজ করে থাকে । Messages- এর মাধ্যমে একজন মোবাইল ব্যবহারকারী অপর এক মোবাইল ব্যবহারকারীর কাছে তার বক্তব্য লিখিত আকারে পাঠাতে পারে।
Contacts অপশনে মোবাইল ব্যবহারকারী মোবাইলের নম্বর সংরক্ষণ করতে পারে । Games অপশনের মাধ্যমে মানুষ বিনোদনের সুযোগ পায় । অনেক মোবাইলে রেডিও আছে , যা দ্বারা মানুষ খবর শুনতে পারে , তা ছাড়া মানুষকে বিনোদনের একটি সুযোগ করে দেয় । অনেক মোবাইলে ইন্টারনেট আছে , যা ব্যবহার করে মানুষ অনেক নতুন বিষয়ে জ্ঞান লাভ করতে পারে । মোবাইল ফোন মুহূর্তের মধ্যে দূর – দূরান্তের মানুষকে কাছে নিয়ে আসে ।
বাংলাদেশ ও মোবাইল ফোন :
বাংলাদেশে মোবাইল ফোন ব্যবহার খুব বেশি দিনের নয় । সিটিসেল কোম্পানি ১৯৯৩ সালে প্রথম তাদের কার্যক্রম শুরু করে এ দেশে । সে সময় মোবাইল ফোন মানুষের কাছে ছিল স্বপ্নের মতো । বিশেষ করে সাধারণ মানুষের কাছে যাদের মোবাইল ফোন ক্রয় করার ক্ষমতা ছিল না ।
১৯৯৬ সালে সরকার গ্রামীণফোন ; বাংলালিংক , যার পূর্বের নাম সেবা এবং একটেল ( বর্তমান নাম রবি ) কোম্পানিকে লাইসেন্স প্রদান করে বাংলাদেশের মোবাইল জগতে এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনে । এরপর বাজারে আসে টেলিটক এবং সর্বশেষ ২০০৭ সালে বাজারে আসে ওয়ারিদ কোম্পানি । ফলে কোম্পানিগুলোর মধ্যে তীব্র প্রতিযোগিতা শুরু হয় এবং এই কোম্পানিগুলোর সেবা কার্যক্রম দেশজুড়ে বিস্তার লাভ করে চলেছে ।
সিটিসেল কোম্পানি :
এটি বাংলাদেশের প্রথম মোবাইল কোম্পানি । ১৯৯৩ সালে সিটিসেল কোম্পানি বাংলাদেশে তাদের কার্যক্রম শুরু করে । এ কোম্পানি গ্রাহকদের বিভিন্ন সুযোগ – সুবিধা দিয়ে থাকে । যেমন- সিটিসেলের গ্রাহকরা ২৫২৫ নম্বরে কল করে জানতে পারে হাসপাতালের তথ্যাদি , ব্লাড ব্যাংক , ফায়ার সার্ভিস , থানা প্রভৃতির তথ্য জানতে পারে , ৪৪৪ – এ কল করে চ্যানেল আই সংবাদ শুনতে পারে , ১২৩ – এ কল করে ছয় বিভাগের ঘটনাবলি জানতে পারে । ( বি.দ্র .: বর্তমানে সিটিসেলের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে ) ।
গ্রামীণফোন কোম্পানি :
এটি বাংলাদেশে বেশি অগ্রসরমাণ কোম্পানি । বাংলাদেশে গ্রামীণফোন কোম্পানির গ্রাহক সবচেয়ে বেশি । এ কোম্পানি ১৯৯৭ সালে এ দেশে তার কার্যক্রম শুরু করে । বর্তমানে বাংলাদেশের সর্বত্র গ্রামীণফোনের গ্রাহক আছে । এ কোম্পানি তার গ্রাহকদেরকে বিভিন্ন রকম সুযোগ – সুবিধা দিয়ে থাকে । যেমন- দেশের এবং বিশ্বের খবর শোনানো , বৈদ্যুতিক বিল জমা , ব্যবসায় – বাণিজ্যের খবর , খেলাধুলার খবর , অ্যাম্বুলেন্স , থানা , হাসপাতাল , সংবাদপত্র প্রভৃতির তথ্য প্রদান করে ।
বাংলালিংক কোম্পানি :
এটি ১৯৯৮ সালে বাংলাদেশে তাদের কার্যক্রম শুরু করে । এর পূর্বের নাম ছিল ‘ সেবা টেলিকম ‘ । কিন্তু ২০০৫ সালে এ কোম্পানি নাম পরিবর্তন করে বাংলালিংক নাম নিয়ে তার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে । এ কোম্পানির মালিক মূলত মিসরভিত্তিক টেলিকম জয়েন্ট কোম্পানি ওরাসকম টেলিকম হোল্ডিং ।
রবি (একটেল) কোম্পানি :
১৯৯৭ সালের ১৫ নভেম্বর এ কোম্পানি বাংলাদেশে তাদের কার্যক্রম শুরু করে । এ কোম্পানি প্রথম এ দেশে ৩০ দিন মেয়াদি ৩০০ টাকার প্রি – পেইড কার্ড চালু করে । বর্তমানে এ কোম্পানির গ্রাহকসংখ্যা ২০ লাখের অধিক ।
টেলিটক কোম্পানি :
টেলিটক কোম্পানি বাংলাদেশের একমাত্র সরকারি মোবাইল ফোন কোম্পানি । এ কোম্পানির গ্রাহকরা কম খরচে বিশ্বের ৫০ টির অধিক দেশে কথা বলতে পারে । তা ছাড়া দেশের মধ্যে এর কলরেট মাত্র ২৫ পয়সা ।
এয়ারটেল কোম্পানি :
এ কোম্পানি ২০০৭ সালে বাংলাদেশে তাদের কার্যক্রম শুরু করে । এটি বাংলাদেশের সর্বশেষ মোবাইল কোম্পানি । এ কোম্পানি সবচেয়ে শেষে এসেও সারা দেশে ব্যাপক বিস্তার লাভ করেছে । বর্তমানে বাংলাদেশের প্রায় প্রতিটি অঞ্চলে গ্রাহক আছে । এ কোম্পানি তার গ্রাহককে বিভিন্ন রকম সুবিধা দিয়ে থাকে । যেমন, ৫ টাকার কথা বললে এরা গ্রাহকদেরকে সাথে সাথে ১ টাকা ফিরিয়ে দেয় । তা ছাড়া অন্যান্য কোম্পানির এফএনএফ নাম্বারের চেয়ে এয়ারটেল অনেক বেশি নাম্বার এফএনএফ করা যায় ।
মোবাইল ফোনের গুরুত্ব :
মানবজীবনে মোবাইল ফোনের গুরুত্ব অপরিসীম । বর্তমান গতিশীল সমাজের সাথে তাল মিলিয়ে চলার জন্য মোবাইল ফোন অত্যাবশ্যক । মোবাইল ফোনের মাধ্যমে মুহূর্তের মধ্যে দূর – দূরান্তের মানুষের সাথে কথা বলা যাচ্ছে । মোবাইল ফোনের মাধ্যমে গান শোনা , ছবি তোলা , গেমস খেলা প্রভৃতি সেবা দানের মাধ্যমে এটি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে । বর্তমানে অধিকাংশ মানুষ মোবাইল ফোন ছাড়া চলতে পারে না । এটি মানবজীবনের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে গেছে । তাই মানবজীবনে মোবাইল ফোনের গুরুত্ব বর্ণনাতীত ।
উপসংহার :
মোবাইল ফোন আধুনিক বিজ্ঞানের এক বিস্ময়কর আবিষ্কার । এটি মানবজীবনের একটি বিরাট অংশ জুড়ে স্থান করে নিয়েছে । তথ্যপ্রযুক্তির কল্যাণে মানুষ নিজেদের সুখ – দুঃখ , হাসি – কান্না ভাগাভাগি করে নিতে পারছে দূর – দূরান্তের আত্মীয়স্বজনের সাথে । আর এ ক্ষেত্রে মোবাইল ফোন রাখছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা । তাই আমাদের দৈনন্দিন জীবনে এ প্রযুক্তির ভূমিকা অপরিসীম ।
উপরে দুইটি মোবাইল ফোন রচনা উল্লেখ করা হয়েছে।
সর্বশেষ
বন্ধুরা আশা করি মোবাইল ফোন রচনা (Mobile Phone Essay In Bengali) নিয়ে আজকের এই আর্টিকেলটি আপনাদের ভালো লেগেছে।
যদি এই মোবাইল ফোন অনুচ্ছেদ রচনা আপনার ভালো লাগে তাহলে সোশ্যাল মিডিয়ায় আপনার বন্ধুদের সাথে অবশ্যই শেয়ার করবেন।
বর্তমানে মোবাইল ফোনে ইন্টারনেট ব্যবহারের মাধ্যমে আমরা পৃথিবীর যেকোন জায়গার খবর নিমিষের মধ্যেই পেয়ে যেতে পারি। মোবাইল ফোনের প্রচুর ইতিবাচক দিক রয়েছে। সেই সাথে এর নেতিবাচক দিক অনেক রয়েছে।
তাই আমাদের এর খারাপ দিকগুলো পরিহার করে ভালো দিক গুলো গ্রহণ করতে হবে।
আপনি আরও পড়তে পারেন –
- প্রতি মাসে ২০ হাজার টাকা আয় করার উপায়
- ছাত্রদের জন্য অনলাইনে আয় করার সেরা ৮টি উপায়
- বাংলাদেশের সেরা ১০টি শিক্ষা বিষয়ক ওয়েবসাইটের নাম
- কম্পিউটার ভাইরাস কি ?