Rh ফ্যাক্টর কি ? Rh বা রেসাস ফ্যাক্টর কাকে বলে
“Rh ফ্যাক্টর কি বা Rh ফ্যাক্টর কাকে বলে” এ বিষয়ে এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা জানবো।
আপনি যদি আরএইচ ফ্যাক্টর (Rh factor) বা রেসাস ফ্যাক্টর (Rhesus factor) কি ? এর বিষয়ে জানতে চান তাহলে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি ভালোভাবে পড়ুন।

O গ্রুপের রক্তবিশিষ্ট ব্যক্তি সব গ্রুপের রক্তের ব্যক্তিকে রক্ত দিতে পারে। এদের বলা হয় সর্বজনীন রক্তদাতা (universal donor)।
AB রক্তধারী ব্যক্তি যেকোনো ব্যক্তির রক্ত গ্রহণ করতে পারে। তাই তাকে সর্বজনীন রক্তগ্রহীতা (universal recipient) বলা হয়।
কিন্তু আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানে সর্বজনীন রক্তদাতা কিংবা সর্বজনীন রক্তগ্রহীতার ধারণা খুব একটা প্রযোজ্য নয়।
কেননা, রক্তকে অ্যান্টিজেনের ভিত্তিতে শ্রেণিকরণ করার ক্ষেত্রে ABO পদ্ধতি সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ হলেও রক্তে আরও অসংখ্য অ্যান্টিজেন থাকে, যেগুলো ক্ষেত্রবিশেষে অসুবিধার কারণ হতে পারে।
যেমন: রেসাস ফ্যাক্টর (Rh factor), যা এক ধরনের অ্যান্টিজেন।
কারো রক্তে এই ফ্যাক্টর উপস্থিত থাকলে তাকে বলে পজিটিভ আর না থাকলে বলে নেগেটিভ।
এটি যদি না মেলে তাহলেও গ্রহীতা বা রোগী আরও অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন। তাই ABO গ্রুপের পাশাপাশি রেসাস ফ্যাক্টরও পরীক্ষা করে মিলিয়ে দেখা উচিত।
Rh ফ্যাক্টর কি ? রেসাস ফ্যাক্টর বা Rh ফ্যাক্টর কাকে বলে
Rh ফ্যাক্টর রেসাস (Rhesus) নামক বানরের লোহিত রক্তকণিকায় অবস্থিত একধরনের ও অ্যাগুটিনোজেন।
রেসাস বানরের নাম অনুসারে এই অ্যান্টিজেনকে রেসাস ফ্যাক্টর বা সংক্ষেপে Rh ফ্যাক্টর বলে।
যেসব মানুষের রক্তে Rh ফ্যাক্টর উপস্থিত, তাদের Rh+ (Rh পজিটিভ) এবং যাদের রক্তে Rh ফ্যাক্টর অনুপস্থিত, তাদের Rh (Rh নেগেটিভ) বলে।
Rh ফ্যাক্টরের গুরুত্ব : Rh ফ্যাক্টর কেন গুরুত্বপূর্ণ ?
Rh- রক্তবিশিষ্ট ব্যক্তির রক্তে Rh+ বিশিষ্ট রক্ত দিলে প্রথমবার গ্রহীতার দেহে কোনো প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় না, কিন্তু গ্রহীতার রক্তরসে ক্রমশ Rh+ অ্যান্টিজেনের বিপরীত অ্যান্টিবডি উৎপন্ন হবে। এই অ্যান্টিবডিকে অ্যান্টি Rh ফ্যাক্টর বলে ।
গ্রহীতা যদি দ্বিতীয়বার Rh+ রক্ত গ্রহণ করে, তা হলে গ্রহীতার রক্তরসের অ্যান্টি Rh ফ্যাক্টরের প্রভাবে দাতার লোহিত রক্তকণিকা জমাট বেঁধে পিণ্ডে পরিণত হবে।
তবে একবার সঞ্চারণের পর যদি গ্রহীতা আর ঐ রক্ত গ্রহণ না করে, তা হলে ধীরে ধীরে তার রক্তে উৎপন্ন সমস্ত অ্যান্টি Rh ফ্যাক্টর নষ্ট হয়ে যায় এবং গ্রহীতা স্বাভাবিক রক্ত ফিরে পায়।
সন্তানসম্ভবা মহিলাদের ক্ষেত্রে Rh ফ্যাক্টর খুব গুরুত্বপূর্ণ । একজন Rh- (Rh নেগেটিভ) মহিলার সঙ্গে Rh+ (Rh পজিটিভ) পুরুষের বিয়ে হলে তাদের প্রথম সন্তান হবে Rh+, কারণ Rh+ একটি প্রকট বৈশিষ্ট্য।
ভ্রূণ অবস্থায় সন্তানের Rh+ ফ্যাক্টরযুক্ত লোহিত কণিকা অমরার মাধ্যমে রক্তে এসে পৌছাবে ফলে মায়ের রক্ত Rh- হওয়ায় তার রক্তরসে অ্যান্টি Rh ফ্যাক্টর (অ্যান্টিবডি) উৎপন্ন হবে। অ্যান্টি Rh ফ্যাক্টর মায়ের রক্ত থেকে অমরার মাধ্যমে ভূণের রক্তে প্রবেশ করে ভূণের লোহিত কণিকাকে ধ্বংস করে। ফলে ভ্রূণও বিনষ্ট হয় এবং গর্ভপাত ঘটে।
এ অবস্থায় শিশু জীবিত থাকলেও তার দেহে প্রচণ্ড রক্তস্বল্পতা এবং জন্মের পর জন্ডিস রোগ দেখা দেয়। যেহেতু Rh বিরোধী অ্যান্টিবডি মাতৃদেহে খুব ধীরে ধীরে উৎপন্ন হয়, তাই প্রথম সন্তানের কোনো ক্ষতি হয় না এবং সুস্থ জন্যায় । কিন্তু পরবর্তী গর্ভধারণ থেকে জটিলতা শুরু হয় এবং ভ্রূণ এতে মারা যায়।
তাই বিয়ের আগে হবু বর কনের রক্ত পরীক্ষা করে নেওয়া উচিত এবং একই Rh ফ্যাক্টরযুক্ত হয় Rh+ নয়তো, Rh-) দম্পতি হওয়া উচিত।
- রক্ত সঞ্চারণে কোনো দাতার রক্ত গ্রহীতার দেহে সঞ্চারণের পূর্বে উভয়ের রক্তের গ্রুপ জানার জন্য পরীক্ষা করে নেওয়া জরুরি। কারণ ভিন্ন গ্রুপের রক্ত গ্রহীতার রক্তকে জমাট বাধিয়ে প্রাণহানির কারণ হতে পারে । আপদকালীন সময়ে রক্ত সঞ্চারণের সময় দাতা ও গ্রহীতার রক্তের গ্রুপ যদি জানা সম্ভব না হয়, সেক্ষেত্রে O এবং Rh নেগেটিভ রক্ত সঞ্চারণ করাই শ্রেয়।
- কোনো শিশুর পিতৃত্ব নির্ণয়ে জটিলতা দেখা দিলে রক্তের গ্রুপ পরীক্ষা করে সমাধান করা যায়।
- রক্তের গ্রুপ নির্ণয়ের মাধ্যমে বিশেষ প্রক্রিয়ায় অপরাধীদের শনাক্তকরণের ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
মানবদেহে অসুস্থ বা দুর্ঘটনার জন্য পর্যাপ্ত রক্তের ঘাটতি দেখা দিলে অন্য মানব দেহ হতে রক্ত সঞ্চালনের প্রয়োজন পড়ে।
এক্ষেত্রে অব্যশ্যই জীবাণু মুক্ত ও সঠিক রক্ত নিশ্চিত করে নিতে হয়। রক্ত সঞ্চালনের পূর্বে রক্তে এইডস, জন্ডিস ইত্যাদি জটিল রোগের জীবাণু আছে কি না তা পরীক্ষা করে নিতে হয়। ডাক্তার অবশ্যই রোগী ও দাতার রক্তের ABO ও Rh ব্লাড গ্রুপ পরীক্ষা করে গ্রুপ ম্যাচ করার মাধ্যমে এক দেহ হতে অন্যদেহে রক্ত সাঞ্চলনের উদ্যোগ নেন।
সঠিকভাবে গ্রুপ ম্যাচ না করে রক্ত সঞ্চালন করা হলে মানবদেহে নানা বিপর্যয় ঘটতে পারে।
Conclusion
“Rh ফ্যাক্টর কি বা Rh ফ্যাক্টর কাকে বলে” এ বিষয়ে আশা করি ভালোভাবে জেনে নিতে সক্ষম হয়েছেন।
আসলে আমি নিজে এসব বিষয়ে তেমন বেশি কিছু জানিনা। আমি science বিভাগ নিয়ে পড়াশোনা করতেছি।
Rh ফ্যাক্টর বা রেসাস ফ্যাক্টর নিয়ে এই আর্টিকেলটি আমি বিজ্ঞান বইয়ের সহায়তা নিয়ে তৈরি করছি।
তাই আর্টিকেলটি পড়ে আপনারা উপকৃত হয়েছেন এই প্রত্যাশাই আমি করি।
- উচ্চ রক্তচাপ কি
- জাতিসংঘের বর্তমান মহাসচিব কে
- নিউটনের প্রথম, দ্বিতীয় এবং তৃতীয় সূত্র ব্যাখা ও উদাহরণসহ
- ক্ষার কি ? ক্ষারের বৈশিষ্ট্য, ব্যবহার এবং ধর্ম